সামনে ভূত

কবি  সমীরণ সরকার

বাস্তব কাহিনী অবলম্বনে

সামনে ভূত

কত ভৌতিক কাহিনী জানা অজানা আছে যা আমাদের কাছে প্রকাশ হয় নানা ভাবে অনেক লেখক লেখিকার মাধ্যমে আবার অনেকের জীবনে ভৌতিক ঘটনা ঘটেছে তাদের থেকে জানা বা শোনা যায়।

এমনই একটা ঘটনা তুলে ধরলাম আমার ইন্ডিয়ান রেলওয়েতে কর্ম জীবনের কাহিনী।

সকলেই জানেন বা চেনেন শিয়ালদা স্টেশনের কথা অনেক বছর আগেকার কাহিনী অনেকেই জানেন পুরানো শিয়ালদা স্টেশন কে ভেঙে নতুন রূপে নির্মাণ হয়েছে। আমার নাইট ডিউটি ছিল ৮ নম্বর প্লাটফর্ম বর্তমানে নয় নম্বর প্লাটফর্ম নামে পরিচিত। গরমকাল সেই সময় এখনকার মত গাড়ি চলাচল করত না মধ্যরাতে গাড়ি আসা যাওয়া ছিল না বললেই চলে। নতুন বিল্ডিং সবে তৈরি হয়েছে অফিস কাচারি অল্প কয়েকটা ছিল কাজ সম্পূর্ণ হয়নি বলে। ওই রাতে আমাদের কোন কাজ ছিল না। অত্যাধিক গরম ছিল। আমি আর আমার এক কলিগ ভাই বিশ্বনাথ বিশু ছাদে চলে গেলাম। চাকরির প্রথম দিক থেকে আমাদের মধ্যে সুন্দর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে বেলঘরিয়ায় থাকে দুজনে দীর্ঘদিন একসাথে কর্ম করে অবসর নিয়েছি। কত রকমের ঘটনা ঘটেছে শুনিয়েছি অনেকের কাছে। কেউ ভয় পেয়েছে আবার আগ্রহকারে শুনেছে ভৌতিক কাহিনী

এইবার তুলে ধরি ওই রাতের এক ভয়ংকর ঘটনা ছাদের দরজায় তালা মেরে চাবি নিয়ে গিয়ে বসলাম আমরা দুজনে ছাড়া আর কেউ নেই আর কারো ওঠার মতো পথ নেই

দুজনে গল্প করছিলাম ফুরফুরে বাতাস এসে বাড়ি দিয়ে যাচ্ছে চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসছিল। একটু তন্দ্রা ভাব রাত তখন আড়াই থেকে তিনটে হবে হঠাৎ কানে এলো কেউ হাতুড়ির বাড়ি মারছে। তন্দ্রা ভাব থাকাতে মনে হয়েছিল অন্য কোথাও থেকে আওয়াজ আসছে আবার চোখটা বন্ধ হয়ে গেল। বিশুর কানে কিছুই ঢোকেনি ক্লান্ত শরীর আমিও কিছু বলতে চাইনি ও একটু ভীতু ছিল কিছুক্ষণ পর আবার হাতুড়ি বাড়ির আওয়াজ বেশ জোরে জোরে অনেকবার কানে এলো আবার তাকালাম আমাদের থেকে হাত দশেকের দূরে শেয়ালদা নতুন বিল্ডিং এ যে ছাদে আট নম্বর প্লাটফর্ম থেকে বর্তমানে নয় নম্বর প্লাটফর্ম থেকে এক নম্বর প্লাটফর্ম  centax এর জলের ট্যাঙ্ক বসানো ছিল দশ হাত দূরে দূরে ট্যাংকের উপরে দাঁড়িয়ে সাদা ধুতি আর ফতুয়া পড়ে হাতুড়ির বাড়ি মারছিল। ঝাপসা চোখে তাকিয়ে দেখি মনে মনে ভেবেছিলাম এত রাতে কেউ উঠবে না আর দরজার চাবি আমাদের কাছে। বিশু কে ঠেলা মেরে তুললাম আমি একটা সিগারেট ধরালাম লোকটা নিচু হয়ে ট্যাংকের নিচে দিকে তাকিয়ে কিছু করছে বিশু উঠে পড়ে বলল কি হয়েছে আমি হাতের ইশারায় দেখালাম কে দাঁড়িয়ে আছে কিছু বুঝে নমস্কার করে নিল হাতের ইশারায় চুপ করে দেখতে বললাম আমি চেঁচিয়ে বললাম কে কে ওখানে কোন সাড়া নেই। আমি বিশুর হাত ধরে উঠে দাঁড়ালাম।

সেই ব্যক্তি আস্তে আস্তে নামতে থাকে আমরা একটু একটু করে এগোতে থাকি আবার ডাকি কে কে বলে উত্তর না দিয়ে হাঁটতে থাকে আমরাও এগোতে থাকি আমরা যতই এগোই দশ হাত দূরত্বে থাকতে হয়। ওকে আর ধরতে পারি না এইভাবে এগিয়ে যাই। পা দুটো অবশ্যই যাচ্ছিল। বিশু এগোতে পারছে না। নেশা গোস্তের মত হয়ে গিয়েছিল। এক নম্বর প্লাটফর্মের কাছে চলে গিয়েছিলাম ছাদ দিয়ে ছাদের যে পাঁচিল থাকে তার উপরে লম্বা বাড়িয়ে উঠে একটা কালো বিড়াল হয়ে গেল।

দুজনেই ভয় পেয়ে গেলাম বিশু ভয়েতে নিচে শুয়ে পড়ল। আমিও বসে পড়লাম। আমাদের শরীর অবশ হয়ে গিয়েছিল গলগল করে ঘাম বেরোচ্ছিল চলার শক্তি ছিল না কানে এলো নাকেস্বরে বড় বাঁচার বেঁচে গেলি।

………………………………………………………………………………………………….

  •  

  • __________________________________________________________

  •  

  •  

  •  

  • __________________________________________________________

  • _______

  •  

  •  

  •  

  •  

  •  

  •  

  •  

  •   

Loading