সুখশান্তির ঘরোঠা টোটকা
প্রফেসর ডক্টর কুশল সেন
অধ্যাপক (ফলিত সংখ্যাতত্ত্ব), Astrological Research Institute of Krishnamurti Paddhati (ARIKP)
সদস্য, মার্গদর্শক মন্ডল, ভারতীয় বৈদিক জ্যোতিষ সংস্থানম্, বারানসী
e-mail : kooshoeg@gmail.com
মানব সভ্যতার আদিমতম কাল থেকেই মানুষ নানা ধরণের শারীরিক কষ্টভোগ করে আসছে। সময়ের অববাহিকাতে চিকিৎসা বিজ্ঞানও অনেক উচ্চতর পর্যায়ে তার আধুনিকতার ছাপ রেখে চলেছে। তবে জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেক ধরণের জটিল থেকে জটিলতর অসুখ ও রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শারীরিক অসুস্থতা বা বৈকাল্য তখনই হয় যখন বায়ু, বিত্ত, কফ এই ত্রিধাতুর বৈষম্য দেখা যায়। এদের বৈষম্যকে সাধারণ অর্থে ‘রোগ’ বলা হয়। মানবদেহে সাধারণভাবে ১২টি অজৈব লবনের সমষ্টির আধার ; এর যেকোনো একটি লবনের বিষমতা দেখা দিলেই শরীরে নানা রোগের উৎপত্তি হয়।
‘স্বাস্থ্যই সম্পদ’ এই উক্তির সমর্থনে, আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে জনক মহামতি চরক তার রচিত কালজয়ী গ্রন্থ ‘চরক সংহিতা’তে শারীরিক সুস্থতার আটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণের কথা সংস্কৃত শ্লোকের মাধ্যমে বর্ণনা করেছিলেন। এই গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণসমূহ নীচে আলোচনা করা হল।
(১) ‘দেহে সর্বত্র চৌষ্ণাস্য – অর্থাৎ দেহের সকল বর্জ্য পদার্থ যেন প্রতিদিন বিনা বাধায় শরীর থেকে নিষ্কাষিত হয়, না হলে মানুষ প্রবলভাবে ত্বকের অনুজ্জ্বলতার শিকার হবে। শরীর বাইরে থেকে ম্রিয়মান দেখাবে।
(২) ‘সমতা লাঘবং সুখম্’ – দেহের ওজন যেন অতিরিক্ত না হয়, অতিরিক্ত ওজন কখনই দেহকে সুখ প্রদান করে না।
(৩) শুত্ তীক্ষ্মা – প্রতিদিন একই সময়ে তীব্র ক্ষুধার অনুভূতি আবশ্যক।
(৪) গাঢ় নিদ্রা- গভীর নিদ্রা শরীরকে সুস্থতা প্রদান করে। প্রতিদিন ছয় থেকে সাত ঘন্টা গভীর নিদ্রার প্রয়োজন।
(৫) মনসোপি প্রসন্নতা – প্রতিদিন মানসিক সুখ সন্তুষ্টির অনুভূতি আবশ্যক। শরীরের সাথে মনের একটি গভীর সংযোগ স্থাপিত রয়েছে।
(৬) শরীরে কর্মসামর্থ্য – মানুষ শারীরিকভাবে কর্মসক্ষম হবে প্রতিদিন।
(৭) অনালস্য চ কর্মসু – শরীরে কোনো অলসতা থাকবে না।
(৮) স্বতঃ সেদৌগমঃ কালে – প্রতিদিন একই সময়ে বিষ্ঠা বা মলত্যাগের মাধ্যমে পেট পরিষ্কার থাকতে হবে। না হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হবে।
অর্থাৎ শারীরিক সুস্থতার লক্ষণের পূর্ণ শ্লোকটি হল –
দেহে সর্বত্র চৌষ্ণাস্য সমতা লাঘবং সুখম্
শুত্ তীক্ষ্ণ গাঢ় নিদ্রা চ মনসোপি প্রসন্নতা।।
শরীরে কর্মসামর্থ্য অনালস্যং চ কর্মসু।
স্বতঃ সেদৌগমঃ কালে স্বস্থতাং লক্ষয়ন্তি হি।।
টোটকা
(১) ফল-ফুল, টাটকা শাকসবজি এবং হাস্যরত শিশুর চিত্র অফুরন্ত জীবনীশক্তির প্রতীক। এই ধরণের চিত্র গৃহের পূর্ব, উত্তর, উত্তর-পূর্ব (ঈশাণ কোণ) দিকে লাগানো উচিত যা জীবনে স্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি প্রদান করে।
(২) ঘরের দক্ষিণ দিকের দেওয়ালে রুদ্রাবতার হনুমানজীর লাল রঙের ছবি পরিবারের প্রতিটি সদস্যের সুস্বাস্থ্যের ইঙ্গিত বহন করে। যদি পরিবারের কোনো সদস্যের জন্মকুন্ডলীতে মঙ্গল গ্রহের অবস্থান শুভ হয় তাহলে এই নির্দিষ্ট ছবি লাগালে তার পরিণাম শুভ হতে শুরু করে।