নিজস্ব প্রতিনিধি – বিশ্বের বৃহত্তম দুই গণতান্ত্রিক দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ‘শক্তিশালী, ঘনিষ্ঠ ও মজবুত’ হওয়ার জন্য পূর্ব থেকেই নির্ধারিত বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউসে  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রথম দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন বাইডেন। দুই দেশের প্রধানের এ বৈঠকে কভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ে আলোচনা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত চতুর্দেশীয় জোট কোয়াডের সম্মেলনে অংশ নেওয়ার ফাঁকে মোদি ও বাইডেনের মধ্যে এ বৈঠকটি সম্পন্ন হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি বাইডেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। এছাড়াও মোদি কোয়ালকম, অ্যাডোবে, ফার্স্ট সোলার, জেনারেল অটোমিকস এবং ব্যাকস্টোনের কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। তাদের সঙ্গে বৈঠকে ফাইভজি, সেমিকন্ডাক্টর এবং সৌর বিদ্যুতের মতো একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। ভারতের বিপুল পরিমান সুযোগ-সুবিধার বিষয় উল্লেখ করে এখানে বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে কোম্পানিগুলোকে উৎসাহী করেন মোদি।

ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি নিয়ে মন্তব্য করার মাধ্যমে বাইডেন ও মোদির আলোচনা শুরু হয়। কভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অভিবাসীদের গুরুত্বের মতো বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছেন তারা। আলোচনার শুরুতেই তারা বিভিন্ন কৌতুক ও হাসির মাধ্যমে পরিবেশ সহজ করে নেন; এরপর ধীরে ধীরে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা সামনে এগুতে থাকেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং  প্রধানমন্ত্রী মোদি উভয়েই মত দেন যে দেশগুলো সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বিভ্রান্তিকর অবস্থানে রয়েছে। সামনে একটি ‘রূপান্তরকামী’ দশক রয়েছে বলে উল্লেখ করেন মোদি। অন্যদিকে বাইডেন সম্পর্কগুলোর একটি ‘নতুন অধ্যায়’ নিয়ে কথা বলেন।

মোদি জানান, ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বীজ বাইডেনের আমলে এসে বর্ধিত হয়েছে এবং এই সম্পর্ক এখন ‘রূপান্তকরণের পর্যায়ে’ প্রবেশ করেছে। এদিক থেকে তিনি মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের গুরুত্বের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন ভারতীয় প্রতিভাবনরা এই সম্পর্কের ‘পুরোপুরি অংশীদার’ হবে। অন্যদিকে বাইডেন বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেশদুটি একটি ‘নতুন অধ্যায়ে’ প্রবেশ করেছে। তারা কভিড-১৯ এর মতো কিছু কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহন করেছে। বাইডেন আরো জানিয়েছেন, জলবায়ু এবং কোয়াড সদস্যদেরসহ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা নিশ্চিতের বিষয়েও কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধানে সহায়তা করতে পারে। আমি মনে করি বিশ্বের দুই বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রর সম্পর্ক শক্তিশালী, ঘনিষ্ঠ এবং মজবুত করার জন্য পূর্বনির্ধারিত। আমি মনে করি এর মাধ্যমে পুরো বিশ্বই উপকৃত হবে।

দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বাণিজ্যের বিষয়টিও উল্লেখ করেন মোদি। তিনি বলেন দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ধরে রাখবে এবং তা সম্মানজনক অবস্থানেই থাকবে। মোদি বলেন, ‘কিছু জিনিস রয়েছে যা শুধু আমাদেরই আছে আবার কিছু বিষয় শুধু আপনাদের রয়েছে। আমরা এভাবে পারস্পরিকভাবে পরিপূরক। আমি দেখতে পেয়েছি এই দশকে বাণিজ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’ মোদি তার বক্তব্যে বলেন, উভয় দেশই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং ঐতিহ্যের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমি আশা করি এই ঐহিত্যগুলোর গুরুত্ব বাড়তেই থাকবে।

Loading