নিজস্ব প্রতিনিধি – পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল আসনে জয় লাভের পর থেকেই তৃণমূলে কংগ্রেসে প্রতিদিন নয়া চমক। তবে এবার সাধারণ মানুষের জন্য কোনও চমক নয়। চমক তৃণমূল বিধায়কদের জন্য। দলের বিধায়কদের মাসিক চাঁদা দ্বিগুণ করে দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিষদীয় দল সূত্রে এমনটাই খবর। ২০০১ সাল থেকে তৃণমূল বিধায়কদের বেতন থেকে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে দলের তহবিলে নেওয়া হত। ২০০৬, ২০১১ এবং ২০১৬ সালের ভোটের পরেও সেই পরিমাণে কোনও বদল আসেনি। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর সেই পরিমাণ বদলানো হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। তৃণমূল পরিষদীয় দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবার থেকে দলীয় তহবিলে বিধায়কদের চাঁদা দিতে হবে দ্বিগুণ। অর্থাৎ, মাসে ২ হাজার টাকা। এই মুহূর্তে, বিধানসভায় তৃণমূলের ২১২ জন বিধায়কের (ভবানীপুর থেকে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় পদত্যাগ করার পর এটিই আপাতত তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা) মধ্যে ১৬৫ জনের বেতনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। পুরনো পাঁচজন বিধায়কের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কিছু সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া তৃণমূলের প্রতীকে জিতে আসা নতুন বিধায়কের সংখ্যা ৪৩ জন। নতুন বিধায়কদের বেতনের অ্যাকাউন্ট এখনও খোলা যায়নি। তাই নতুন সিদ্ধান্তের সঙ্গে ঠিক হয়েছে, করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই বিধায়কদের দ্রুত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে বলা হবে। তারপরই গত মে মাস থেকে হিসাবে কষে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে মাসে ২ হাজার রুপি করে দলীয় তহবিলের জন্য কেটে নেওয়া হবে। অর্থাৎ, বেতন থেকে সরাসরি ওই অর্থ প্রতি মাসে দলের তহবিলে জমা পড়বে। একজন বিধায়ক শপথ নেওয়ার দিন থেকে ভাতা, ফোনের বিল ও বাড়িভাড়া বাবদ মাসে ২১ হাজার ৮৭০ টাকা পান। এ ছাড়া দৈনিক ভাতা ও বিধানসভার বিভিন্ন কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য মাসিক ৬০ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। সব মিলিয়ে প্রতি মাসে প্রায় ৮২ হাজার টাকা পান পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার একেক জন সদস্য। সেই পাওনা অর্থ থেকেই তৃণমূলের দলীয় তহবিলে নেওয়া হবে ২ হাজার টাকা। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বিধানসভার প্রথম অধিবেশন বসবে বলে জানা গিয়েছে। সেই সময়েই দলীয় বিধায়কদের নতুন অ্যাকাউন্ট খোলাসহ বেতন থেকে দলীয় চাঁদা কেটে নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
বিধানসভায় শাসকদলের উপ-মুখ্য সচেতক তথা বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় বৃহস্পতিবার বলেন, ‘দলের জন্যই সবার বিধায়ক হওয়া। তাই দল যখন চাঁদা দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন পরিষদীয় দলের সদস্যরা দলের সেই সিদ্ধান্ত অবশ্যই মেনে নেবেন।’