নিজস্ব প্রতিনিধি – বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী মিলে বেড়াতে যাওয়া এখন একটা চিরাচরিত প্রথা হয়ে গেছে তৎ। কারণ একে অপরকে চেনা এবং আলাদা করে সময় দেয়ার ব্যাপারটাও প্রাসঙ্গিক বৈ কি! বাংলায় যাকে বলা হয় ‘মধুচন্দ্রিমা’, ইংরেজিতে ‘হানিমুন’। এই শীতে যারা বিয়ে করছেন তারা চাইলে ভারতে ঘুরে আসতে পারেন। কাশ্মির, সিমলা ছাড়াও ভারতে অনেক জায়গা আছে হানিমুন করার মতো। তেমন তিন জায়গার খোঁজখবর নিয়ে এই আয়োজন।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ:
আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ অবস্থিত বঙ্গোপসাগরে। এই দ্বীপপুঞ্জে মোট ৫৭৪টি দ্বীপ রয়েছে, যার মাত্র ৩৬টি ভ্রমণের জন্য উন্মুক্ত। এখানে বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছে থাকলে প্রথমেই যেতে হবে এখানকার পোর্ট ব্লেয়ার। এটাই হলো এন্ট্রি এবং এক্সিট পয়েন্ট। কলকাতা থেকে বিমানে পোর্ট ব্লেয়ার যেতে সময় লাগে আড়াই ঘণ্টা। সমুদ্র পথেও যেতে পারেন, সময় লাগবে ৬০ ঘণ্টা! যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে হোটেল ও গাড়ি বুকিং দেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
জারওয়া, অঙ্গা, সেন্টিনেলিজ, সাম্পেনদের অভিনব জীবনযাপন আমাদের সভ্যতা থেকে একদমই আলাদা। করভিন কোভ বীচের গোধূলি বেলার দৃশ্য আপনাদের দু’জনের খুবই ভালো লাগতে পারে। বারতাং দ্বীপের জারোয়া সংস্কৃতি দেখার জন্য আদর্শ। রেন ফরেস্টের মধ্যে বন্ধুরপথ ও ম্যানগ্রোভের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে পাড়ি দিন লাইমস্টোন কেভে। দর্শন করুন মহাকালের বিগ্রহ। জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা বাজেট রাখলেই হবে।
মুন্নার;
মুন্নারকে কেরালার কাশ্মীর বলা হয়। মুধিরাপুজা, নাল্লাথানি ও কুন্দালি নদীর স্রোত যেন এক হয়ে মিলেছে মুন্নারের ঠিক মাঝখানে। হয়তো এই নদীর কারণেই প্রাকৃতিকভাবে মুন্নারের আবহাওয়া, জীবজন্তু ও গাছপালা অন্য যে কোনো জায়গা থেকে আলাদা। মুন্নারের চা বাগানে ঘেরা পরিবেশে কয়েকদিন কাটালেই মন ভালো হয়ে যাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
আনাইমুদি শৃঙ্গ ট্রেকিং করতে করতে কুয়াশায় মোড়া চা বাগানগুলো আপনার চোখে আরাম দেবে তা চোখ বুজে বলে দেয়া যায়। এরপর মাত্তুপেটি ড্যাম এবং সেখানে কাপল বোটিং করে সময় কাটাতে পারেন। চেখে দেখতে পারেন বিখ্যাত রিসোর্টে সি ফুড প্ল্যাটার। তারপর চলে যান টপ স্টেশন, যা ১৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। সেখানের মূল আকর্ষণ হলো নিলাকুঞ্জীরি ফুল, যা ১২ বছরে ফোটে মাত্র একবার। জনপ্রতি ২৫ হাজার টাকা খরচ হতে পারে।
৩. শিলং:
তুলনামূলক কম খরচে দেশের বাইরে হানিমুন করতে চাইলে আদর্শ জায়গা হতে পারে মেঘালয়। জীবনের নতুন ইনিংসের শুরুটাকে আরো বেশি রোমাঞ্চকর করতে যেতে পারেন মেঘ, পাহাড়-পর্বত, ঝরনা আর জলপ্রপাতের রাজ্য মেঘালয়ের শিলং। পরিকল্পনায় রাখতে পারেন পৃথিবীর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের এলাকা চেরাপুঞ্জিটাও! বাংলাদেশ সিলেট সীমান্ত থেকে চেরাপুঞ্জি সোজাসুজি বিশ কিলোমিটারেরও কম।
মেঘালয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়ও যেতে পারেন আপনারা, আবার নির্ভরযোগ্য কোনো ট্যুর অপারেটরের সহায়তা নিতে পারেন। দ্বিতীয়টি বেছে নিলে আপনাকে ভিসার আনুষ্ঠানিকতা, যাতায়াত ও থাকা-খাওয়া নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না। যদিও এতে খরচটা একটু বেশি পড়বে, তবে আপনার ভ্রমণ হবে অনেক নিরাপদ। নিজ ব্যবস্থাপনায় গেলে একটু সতর্ক থাকতে হবে। জনপ্রতি ১৫ হাজার টাকায় কয়েকদিন ঘোরা যাবে।