নিজস্ব প্রতিনিধি – কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা সামনে এসেছে। এ থেকে পশ্চিবঙ্গ বিজেপিতে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। যার কেন্দ্রে দিলীপ ঘোষ। তাকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে মন্ত্রী করা হতে পারে।
রাজ্যে নির্বাচনী ধাক্কার পরে সভাপতি পদে দিলীপ ঘোষ থাকবেন কি-না, এ প্রশ্ন কিছু দিন ধরেই বিজেপি মহলে ঘুরছে। যদিও দিলীপ এসব বিষয়কে এখনও আমলই দিতে চাইছেন না। দলের একাংশের ধারণা, শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে দেওয়ার পরে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে যেভাবে ‘গুরুত্ব’ পাচ্ছেন, এ পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সংগঠনে রদবদলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে দিলীপ সরলে শুভেন্দুকে রাজ্য সভাপতি করা হবে কি-না, সেই প্রশ্নে মতভেদ আছে। দলের একটি বড় অংশ মনে করে, ভোটে জেতা আর দলের সাংগঠনিক শীর্ষে বসা, সংঘ পরিবারের চোখে দুটি আলাদা বিষয়। দিলীপের মতো যারা সংগঠনের শীর্ষে বসেন, তারা মূলত সংঘ পরিবারের। এছাড়া দলে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি বজায় রাখার প্রবণতা বেড়েছে। কিন্তু দিলীপকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরানো হবে না, তেমন কথাও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। তাতেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি দিলীপকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হতে পারে।
২০১৯ সালে বিজেপি রাজ্যে ১৮টি লোকসভা আসন জেতার পরেও সম্ভাব্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে দিলীপের নাম নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পুরনো প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে দ্বিতীয় দফাতেও রাখেন। সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে যুক্ত করেন দেবশ্রী চৌধুরীকে। রাজ্য কোনো পূর্ণ মন্ত্রী পায়নি। মন্ত্রিত্ব নিয়ে প্রশ্নে দিলীপের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘আমাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হবে, এ কথাটা আমাকে আগেও কেউ বলেননি, এখনও বলছেন না।’ অন্যদিকে, রাজ্যের তিন বিজেপি সংসদ সদস্য সৌমিত্র খাঁ, অর্জুন সিংহ, নিশীথ প্রামাণিক দিল্লিতে কেন ‘ঘাঁটি’ গেড়ে বসে রইলেন, আলোচনা চলছে তা নিয়েও। তারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টাও করেন। বিজেপির একটি সূত্রের বক্তব্য, যেসব সংসদ সদস্যকে রাজ্যে বিধানসভার প্রার্থী করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে জিতেছেন মাত্র দু’জন। কোচবিহারে নিশীথ, নদিয়ায় জগন্নাথ সরকার। তবে তারা বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে সংসদ সদস্য পদেই রয়েছেন। বিধানসভায় বাবুলসহ বিজেপির আর কোনো সংসদ সদস্য প্রার্থী জেতেননি। সেক্ষেত্রে যারা বিধানসভায় জিততে পারেননি, তাদের ‘জোরের’ জায়গা একটু কমার আশঙ্কা। সেই তালিকায় বাবুলও ব্যতিক্রম নন। সেক্ষেত্রেও দিলীপের নাম চর্চায় এসে পড়ছে। কারণ, তিনি সংসদ সদস্য, রাজ্য সভাপতি এবং বিধানসভা ভোটে দাঁড়াননি। যদি দিলীপকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হয়, তা হলে রাজ্য সভাপতি পদের দাবিদার কারা? দলীয় সূত্রের খবর, সেখানেও প্রত্যাশীর সংখ্যা কম নয়। তাতে বর্তমান কমিটির একাধিক সাধারণ সম্পাদক এবং সহ সভাপতি আছেন বলে আভাস মিলছে। তবে সবটাই নির্ভর করবে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তার ওপরে।