নিজস্ব প্রতিনিধি- নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজার। বুধবার রাতে এখানেই তার উপর হামলার অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘটনার প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়েই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উত্তাপ ছড়িয়েছে নন্দীগ্রাম ২নং ব্লকের বিরুলিয়া বাজারে। সকাল থেকেই তৃণমূলের একাধিক নেতা-কর্মী বিরুলিয়া বাজারে জড়ো হতে থাকেন।তারা মুখ্যমন্ত্রীর ওপর হামলা হয়েছে অভিযোগ তুলে বিজেপি-র বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন।
এর পরেই বিজেপি নেতা-কর্মীরাও দল বেঁধে ঘটনাস্থলে গিয়ে গোটা মমতার উপর ‘হামলা’র ঘটনাকে সাজানো বলে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। দু’পক্ষ মুখোমুখি এসে পড়ায় শুরু হয় ঝামেলা। একটা সময় হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়।
তবে তা বেশি দূর গড়ায়নি। স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে ঝামেলা মিটলেও গোটা এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলারসহ সভাপতি প্রলয় পাল বিরুলিয়া এলাকারই বাসিন্দা। ঘটনার খবর পেয়েই তিনিও দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদে সামিল হন।
প্রলয়ের দাবি, ‘‘গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে আঘাত নিছকই দুর্ঘটনা। কারণ বিরুলিয়া বাজারের ওপর দিয়ে যে ঢালাই রাস্তা গিয়েছে, সেখানে প্রায় বছর দুয়েক আগেই রাস্তার দু’পাশে দু’টি লোহার খুঁটি পোঁতা হয়েছিল। ভারী মালবাহী ভ্যান বা ভারী কোনও গাড়ি ওই রাস্তায় যাতে ঢুকে না পড়ে, তার জন্যই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বুধবার সেই খুঁটি না দেখে নামতে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে চোট লাগে। এর সঙ্গে হামলার কোনও যোগ নেই।
সেই ঘটনাকে হাতিয়ার করেই ‘মিথ্যে হামলা’র অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে প্রলয়ের দাবি। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ-সহ জেলাশাসক বিভু গোয়েল তদন্ত শুরু করেছেন। তারা এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
প্রলয়ের দাবি, ‘‘শুভেন্দুর নেতৃত্বে গোটা নন্দীগ্রামে যেভাবে বিজেপি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তাতে এ বার মমতা বিপুল ভোটে হারবেন। এভাবে মিথ্যে হামলার অভিযোগ তুলে মানুষের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা হচ্ছে। ’’ তার দাবি, এই ঘটনার ফলে নন্দীগ্রামের মানুষ মমতার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন। যদিও নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা এবং মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের দাবি, ‘‘বিজেপি বরাবরই ষড়যন্ত্র করে। মমতা নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর পর বিজেপি পায়ের তলায় মাটি পায়নি। তাই দলনেত্রীর ওপর হামলা চালিয়েছে গেরুয়া শিবির। ’’ ঘটনায় দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।