নিজস্ব প্রতিনিধি – ভোটগ্রহণের কয়েক ঘণ্টা আগেই ‘সিল’ করে দেওয়া হল নন্দীগ্রাম। জলে এবং স্থলে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশ দিয়ে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করল নির্বাচন কমিশন। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের আগে বেশ কিছু দিন ধরেই নন্দীগ্রাম এলাকায় বহিরাগত প্রবেশের অভিযোগ তুলে আসছিল তৃণমূল। বুধবার সন্ধ্যায় কার্যত সেই অভিযোগকে কার্যত মান্যতা দিয়েই বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করা হল। যে ভাবে শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তায় মহিলা সিআরপি নিয়োগ করা হয়েছে, একই ভাবে সংযুক্ত মোর্চা প্রার্থী মীনাক্ষীর নিরাপত্তাতেও জোর দেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকেই তাঁর জন্য ৪ জন সশস্ত্র নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ২০০ মিটার এবং ইভিএম গুলি যেখানে মজুত রাখা হয়েছে, সেই জায়গাগুলি বাদ দিয়ে নন্দীগ্রামের সর্বত্রই ১৪৪ ধারা জারি করেছে কমিশন। নামানো হয়েছে ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। নন্দীগ্রামের মোট ভোটার সংখ্যা ২ লক্ষ ৫৭ হাজার ৯৯৯। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ২৫৭। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৮৯৮। পূর্ব মেদিনীপুরের নিরাপত্তা আরও আটোসাঁটো করতে হলদিয়ায় পাঠানো হয়েছে আইপিএস অফিসার প্রবীণ ত্রিপাঠীকে। নন্দীগ্রামে থাকবেন খগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী। এ ছাড়াও নজিরবিহীন ভাবে সুন্দরবন অঞ্চলে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। আজ দ্বিতীয় দফায় যে ৩০ কেন্দ্রে ভোট হবে, সেখানে ৫ হাজার ৫৩৫ বুথে ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে, যাতে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অনলাইন নজরদারি চালানো যায়। এ মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৭৩২, পূর্ব মেদিনীপুরে ১ হাজার ৬১১, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১ হাজার ৮০২ আর বাঁকুড়াতে ১ হাজার ৩৯০টি বুথে ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৩ হাজার ৪৯টি বুথে থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরা। মাইক্রো অবজার্ভার থাকবে ১ হাজার ৯১৫টি বুথে। ২৮৬টি বুথে ভিডিয়ো ক্যামেরায় নজরবন্দি করা হবে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। ইতিমধ্যেই ৬৩২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে ৩০ কেন্দ্রে। রাজ্যে এই মুহূর্তে ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। আরও ২০০ কোম্পানি আসছে ৮ মার্চের মধ্যে। দ্বিতীয় দফায় মোট প্রার্থী ১৭১ জন। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রার্থীর সংখ্যা ১৯ জন। পূর্ব মেদিনীপুরে সবচেয়ে বেশি জন প্রার্থী রয়েছেন, ৫৮ জন। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪১ জন প্রার্থী রয়েছেন। বাঁকুড়ায় ৫৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই ৩০ কেন্দ্রে ভোট পরিচালনা সঠিক ভাবে সম্পাদন করতে ২৩ জন জেনারেল অবজার্ভার, ৯ জন এক্সপেনডিচার অবজার্ভার এবং ৬ জন পুলিশ অফিসারকেও নিয়োগ করা হয়েছে। মোট বুথের সংখ্যা ১০ হাজার ২২০। এখনও পর্যন্ত মোট অভিযোগ জমা পড়েছে ১৩ হাজার ২০৭টি। তার মধ্যে ১১ হাজার ৯টি অভিযোগেই সত্যতা রয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্বিতীয় দফায় ৩০ কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭৫ লক্ষ ৯৪ হাজার ৫৪৯। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৮ লক্ষ ৮০ হাজার ৯৫৫। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৩৭ লক্ষ ১৩ হাজার ৫০৮। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটারের সংখ্যা ৮৬। বয়স্ক ভোটার যাঁদের বয়স ৮০-র ঊর্ধ্বে, এমন ভোটারের সংখ্যা ১ লক্ষ ১৮ হাজার ১১৬।

Loading