নিজস্ব প্রতিনিধি – আসছে ভোট। আর এ ভোটে খেলতে চায় সব দলই। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘আসুন, খেলা হয়ে যাক।’ তার অন্যতম সেনাপতি অনুব্রত মণ্ডলেরও হুঙ্কার, ‘ভয়ঙ্কর খেলা হবে।’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পাল্টা দিচ্ছেন, ‘আমরাও বলছি খেলা হবে। তোমাদের (তৃণমূল) খেলা শেষ হয়ে গিয়েছে।’ ‘খেলা হবে’ বার্তা দিয়ে নবান্ন অভিযান করেছে বাম ছাত্র-যুবকরাও। ভোটের আগে হঠাৎ পশ্চিমবঙ্গে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই স্লোগান। হুমকিতে, চ্যালেঞ্জে, গানে, প্যারোডিতে, পোস্টারে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে, ‘খেলা হবে’। যেভাবে পশ্চিমবঙ্গে ‘খেলা হবে’ স্লোগান দেয়া হচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন সমাজতত্ত্ববিদ অভিজিৎ মিত্র। তার কাছে এই খেলা ‘আসলে মারণ খেলা।’ অভিজিৎ মিত্র বলেন, ‘খেলা হবে কথাটি শুনলেই আমার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘হোরিখেলা’ কবিতাটির কথা মনে পড়ে যায়। সেখানেও রক্তাক্ত খেলা হয়েছিল।’
‘খেলা হবে’ স্লোগানের নিন্দা করেছেন প্রাক্তন নকশাল নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘সমাজ গঠনের লড়াই, আত্মত্যাগ, মানুষের আন্দোলন, এসব বিষয়ে লঘু করে দেওয়ার জন্যই ‘খেলা হবে’ স্লোগান দেয়া হচ্ছে। এ সবই বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা।’
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের এই খেলার ইচ্ছাকে ভালোভাবে নিচ্ছেন না সাধারণ মানুষও। যোধপুর পার্কের বাসিন্দা, চিকিৎসক অসিতরঞ্জন গোসাই বলছেন, ‘রাজনৈতিক নেতাদের আমরা খেলোয়াড় হিসেবে দেখতে চাই না। খেলা দেখার জন্য আমরা তাদের ভোটে জিতিয়ে আনিনি। খেলা দেখার জন্য এবারেও আমরা ভোট দিতে যাব না। বাংলায় আমরা চাই গণতান্ত্রিক, জনদরদি, সংবেদনশীল, ধর্মনিরপেক্ষ সরকার।’