নিজস্ব প্রতিনিধি -কলকাতা থেকে লন্ডন। তাও আবার বাসে চেপে। খরচ ৮৫ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৮ হাজার টাকা। বিশ্বের দীর্ঘতম রুটের সেই বাস অবশ্য আর পাঁচটা বাসের মতোন সাধারণ নয়। এক কথায় বিলাসবহুল। যা কিনা হার মানাবে যে কোনও ছোটখাটো বাংলোকেও। কি ভাবছেন, বিলাসবহুল ওই বাসে চেপে কলকাতা থেকে লন্ডন সফরে যাবেন? সেক্ষেত্রে আগেই বলে রাখা ভালো বর্তমানে ওই বিলাসবহুল বাস পরিষেবা অমিল। জানা গিয়েছে, বিলাসবহুল ওই বাস পরিষেবা ছিল ১৯৫০-এর দশকে। বাসটি বিশেষ পরিচিত ছিল অ্যাবার্ট নামে। আনুমানিক ১৫০টি সীমান্ত পেরিয়ে চলাচল করত ওই বাস। কমবেশি ৪৫ দিনের ব্যবধানে শেষ হত যাত্রা। শুনে খানিকটা হতবাক হলেন? কি ভাবছেন, নিছক গল্প? তাহলে একনজরে জেনে নেওয়া যাক বিশ্বের দীর্ঘতম রুটে চলাচলকারী বাসের ইতিবৃত্ত। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় ওই বাসের একটি ছবি। যে ছবিতে স্পষ্ট একটি বাসের গায়ে লেখা লন্ডন কলকাতা লন্ডন। জানা গিয়েছে ১৯৫০-এর দশকে বিশ্বের দীর্ঘতম রুটে চলাচলকারী ওই বাসটি ১৫টি সফর সম্পন্ন করেছিল। যাত্রা শুরু হত লন্ডন থেকে। সেখান থেকে সোজা পৌঁছে যেত বেলজিয়াম। এরপর পশ্চিম জার্মানি হয়ে বাসটি যেত অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায়। সেখান থেকে যুগোস্লোভাকিয়া, বুলগেরিয়া, তুরস্ক, ইরান, আফগানিস্তান, পশ্চিম পাকিস্তান হয়ে ভারতে প্রবেশ করত বাসটি। ভারতে প্রবেশ করতেই সোঁজা পৌঁছে যেত রাজধানী দিল্লিতে। সেখান থেকে আগ্রা। এরপর একে একে এলাহাবাদ, বেনারস হয়ে কলকাতায় পৌঁছে যাত্রা শেষ হত। দীর্ঘ যাত্রা পথে যাত্রীদের আমোদের লক্ষ্যে বাসেই বন্দোবস্ত ছিল খাবারের। এছাড়াও একটানা বসে থাকতে গিয়ে কোনও সমস্যা না হয় সেক্ষেত্রে হাল ফ্যাশানের গদিওয়ালা বিশেষ সোফারও বন্দোবস্তও ছিল। অন্যদিকে, মনোরঞ্জনের লক্ষ্যে ছিল রেডিও। সেক্ষেত্রে খানিকটা বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হত যাত্রীদের। সব মিলিয়ে টিকিট মূল্য ছিল ১৪৫ পাউন্ড। বর্তমানে ভারতীয় মুদ্রায় ১৩ হাজার ৬৪৪ টাকা। উল্লেখ্য, দীর্ঘ যাত্রা পথে ওই বাসটি শুধু সড়ক পথে ছুটত না। পেরতে হত জলপথও। সেক্ষেত্রে ফেরির সাহায্য নেওয়া হত বলে জানা গেছে।

Loading