নিজস্ব প্রতিনিধি – তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী ও একসময়কার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একান্ত অনুগত শুভেন্দু অধিকারীকে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধীদলীয় নেতা করায় বিজেপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকট হয়েছে। বিরোধী দলের নেতা নির্বাচন নিয়ে বিজেপির অভ্যন্তরের আদি–নব্যের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতারাও অনুধাবন করতে পেরেছেন। বহু জয়ী বিধায়কই চেয়েছিলেন মনোজ টিগ্গাকে বিরোধী দলনেতা করা হোক। তারপরও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা শুভেন্দু অধিকারীকেই বিরোধী দলের নেতা নির্বাচন করে। কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্তটি বিজেপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা ভালোভাবে নেয়নি। এর প্রমাণ পাওয়া গেল আলিপুরদুয়ার বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদের কথায়। তিনি বলেন, শুভেন্দু অধিকারীকে বিরোধী দলনেতা পদে বসিয়ে আদি নেতাদের প্রতি বঞ্চনা করেছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ভারতীয় জনতা পার্টি বিরোধী দলনেতার পদ প্রাপ্য ছিল বিরোধী মনোজ টিগ্গার। ওই পদ পাওয়ার অধিকার ছিল মনোজের। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি তো নিজের কর্মীদের মর্যাদা দিতে জানে না। তাই এ ক্ষেত্রেও তেমনটা হয়নি। সোমবার কলকাতার তৃণমূল ভবনে আলিপুরদুয়ার বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদসহ ৮ নেতা তৃণমূলে যোগদান করেন। দলত্যাগের পরেই বিজেপি নেতৃত্বের বিরোধী দলনেতা নির্বাচনের সিদ্ধান্তকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। তবে একদা সতীর্থের এই মন্তব্যে আমল দিতে চাননি বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ।

কে এই মনোজ?

২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে যে ৩ বিজেপি বিধায়ক জয়ী হয়েছিলেন, তাদেরই একজন মনোজ। তিনি আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাটের দু’বারের বিধায়ক। এবার বিজেপির যে ৭৭ জন বিধায়ক জয়ী হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে ২৬ জন উত্তরবঙ্গ থেকেই। কিন্তু সংসদ সদস্য পদে থেকে যাওয়ার দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে দিনহাটা থেকে জিতেও পদত্যাগ করেছেন কোচবিহারের সাংসদ নীশিথ প্রামাণিক। তাই উত্তরবঙ্গের বিধায়ক সংখ্যা ২৫ জন। সেই সূত্রেই উত্তরবঙ্গ থেকে বিরোধী দলনেতা বাছাইয়ের দাবিও উঠেছিল বিজেপির অভ্যন্তরে। কিন্তু নন্দীগ্রাম আসনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে জয়ী শুভেন্দুকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিরোধী দলনেতা হিসেবে বেছে নেন।

মনোজের বক্তব্য

রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে এখনই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাননি মনোজ টিগ্গা। তিনি এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্যও দিচ্ছেন না। মনোজ টিগ্গা বলেন, আমি দলের একনিষ্ঠ সৈনিক। দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে, তখন সাধ্যমতো সেই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। দল কাকে কী দায়িত্ব দেবে, তা ঠিক করবেন শীর্ষ নেতৃত্ব। আর সেই নির্দেশ হবে আমার কাছে শিরোধার্য। তাই কোথায় কে কী বলল, তা নিয়ে আমি কোনও জবাব দেব না।

Loading