সৌমিলী

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ছোট ছোট ঘটনার মধ্যে দিয়ে আমাদের অজান্তেই কখন যে দেখা যায় প্রেমের একঝলক স্নিগ্ধ আলো আমরা কখনা বুঝতে পারি আবার কখনো বুঝতে পারি না।সময়ের হাত ধরে সবার জীবনেই কখনো না কখনো এইভাবেই আসে প্রেমের ইশারা।এইরকমই একটি মিষ্টি প্রেমের কথা লিখছেন বিশিষ্ট কবি সাহিত্যিক অজয় ভট্টাচার্য।

দ্বিতীয় পর্ব :-

গতদিনের নির্দিষ্ট কামরাতে উঠে তাকে নজরে পড়ল সৌমিলীর।

উভয়ের দৃষ্টি বিনিময়ে ,যেন অনেক কথাই বলা হয়ে গেল।

ট্রেন থেকে নেমে সৌমিলী একটু এগিয়ে হাতব্যাগ থেকে রোদ চশমাটা বের করার অজুহাতে ইচ্ছে করেই রাস্তায় হোঁচট খেয়ে চিৎকার করে উঠল।

আশপাশের লোকজন ছুটে এলো।

ট্রেনের সহযাত্রীটিও পাশে এসে দাঁড়াল।

উৎসাহী দৃষ্টি নিয়ে সৌমিলীকে জিজ্ঞাসা করল, ””কোথায় যাবেন ম্যাডাম।”

সৌমিলী নিজের স্কুলের নাম  , নিজের পরিচয় দিল।

ভদ্রলোকটি একটি রিক্সা নিয়ে বলল,

” চলুন, ম্যাডাম।

আমি ও ঐ দিকেই যাবো।”

দৃষ্টি বিনিময়ের বীজ রোপণ ,

সৌমিলীর ভালোবাসার অঙকুরোদগমের সূচনা করল।

রাতে বাড়িতে  ফিরে সৌমিলী ভাবতে লাগলো,

কালকেও কি সে ইচ্ছে করেই ঐসময়ের ট্রেনে যাবে ?

ভালোবেসে বিয়ে করা সুশোভনের কাছে প্রায়ই ওকে নির্যাতিত হতে হয়।

মনের মূর্চ্ছনায় সৌমিলী আটটা পঞ্চাশের লোকালেই যাবে ঠিক করলো।

সুশোভন লক্ষ্য করছে ,যে সৌমিলী কয়েক দিন ধরেই আধ ঘন্টা পরে সকালে বাড়ি থেকে বের হচ্ছে।

তবুও জিজ্ঞাসা করার সাহস নেই সুশোভনের।

এক সংসারে দুজনে থেকে ও কত দূরত্ব ওদের!

আজকে আটটা পঞ্চাশের লোকালে নির্দিষ্ট কামরাতেই উঠে সৌমিলী কোনো বসার জায়গা না পেয়ে দাড়িয়ে থাকল।

হঠাৎ ই সে শুনতে পেল,”ম্যাডাম, এই দিকে আসুন”।

সৌমিলী ভীড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে লোকটার রেখে দেওয়া জায়গায় গিয়ে বসল।

সৌমিলী অনুভব করল  ওর শরীরের উত্তেজনার পারদ।

ট্রেনের ঝাঁকুনিতে সৌমিলীর বাহুবন্ধ স্পর্শ পেলো অরিন্দমের।

অরিন্দম হাসনাবাদেই গ্রামীণ ব্যাঙকে চাকরি করে-

 কলকাতায় বাড়ি।

অরিন্দম বাড়ি ফেরে পাঁচটা সাতাশের ট্রেনে হাসনাবাদ থেকে।

সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে অন্ধকার ঘরে সৌমিলী শুয়ে আছে।

আজকে যেন গরমটা একটু বেশিই পড়েছে।

পাশের ঘরে ছেলেটা একাকী পড়ছে।

আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সুশোভন চলে আসবে।

ছেলেটা হওয়ার পর থেকেই ও কেমন পাল্টে গেছে।

…………………………………………………….

  •  

  • __________________________________________________________

  •  

  •  

  •  

  • __________________________________________________________

  • _______

  •  

  •  

  •  

  •  

  •  

  •  

  •  

  •   

Loading