।। রত্নগর্ভা ।।
কলমে – মধুমিতা_দেব
“একবার খোকা ফিরে আয় দেশে,
দেখে যা রে শেষ দেখা,
সব আছে তবু,তাঁকে ছাড়া হায়,
আমি যে বড়ই একা।
নিথর দেহটি পড়ে আছে তাঁর,
বিশাল প্রাসাদ পরে,
কাল সারারাত থাকবেন তিনি,
শুধু খোকা তোর তরে।
এখনি বেড়িয়ে পড়না রে খোকা,
ঘরে আয় তাড়াতাড়ি,
তোর বাবা আজ গত হয়েছেন,
চলে গেছে সব ছাড়ি।”
“হ্যালো…..হ্যালো,মা, শুনতে পাচ্ছ?
আমার কথাটা শোন,
পারব না আমি আসতে এবার,
মিছে কেন দিন গোন?
আজ অফিসে মিটিং চলছে,
কাল যাব লন্ডন,
না গেলে যে সব ভণ্ডুল হবে,
আটকাবে প্রমোশন।”
আজই বরং বাবার দেহ,
কর মা গো সৎকার,
মনের মাঝেই আছেন তিনি,
(ছাড়), ঠুনকো সংস্কার।”
আর্ত সুরে বলেন মাতা,
“ছিঃ ছিঃ,এ কি কথা!
প্রোমোশন তোর বড় হল আজ?
কি বলিস তুই যা তা।
সবাই করবে ছিঃ ছিঃ ওরে,
তোর এমন কাজের তরে,
মুখ দেখাব কেমন করে,
তুই না এলে ঘরে?”
“ষ্টপিড মা, সবাই তোমায়
রত্নগর্ভা বলে,
তোমার এত খাটনি মা গো,
ফেলে দেবে সব জলে?
ছোট থেকেই শক্ত হতে,
শিখিয়েছিলে তুমি,
আজও তাই সফলতায়,
তোমার চরণ চুমি।
সেই যে সেদিন ছোটমামার,
অ্যক্সিডেন্ট হল,
ভগবানের কাছে যখন,
ঠাম্মি চলে গেল,
পিসীর মেয়ে রন্টি ছিল,
আমার খেলার সাথী,
হঠাৎ করে নিভল যখন,
তার জীবনের বাতি,
সেদিন তুমি বুঝিয়েছিলে,
শক্ত কর মন,
এসব ঠুনকো ব্যাপারেতে,
যাবার কি প্রয়োজন?
ঠুনকো সব সেন্টিমেন্ট,
উন্নতির কাঁটা,
লেখাপড়ায় দাও শুধু মন,
দেখাও বুকের পাটা।
আজকে তোমার মুখ রেখেছি,
ডলার ওড়াই আমি,
তাই,রত্নগর্ভা সবাই তোমায়,
বলে দিবসযামী।
আমার এই উন্নতিতে,
সবাই করছে ছিঃ ছিঃ?
হায়রে ভুবন,তোর এই ফাঁসীর,
কারন যে তোর মাসী।
তবু মা গো,একটু শোন,
দিচ্ছি তোমায় কথা,
যাবই মা গো তোমার কাছে,
দেখতে শেষ দেখাটা।
এ কি! মা… কাঁদছ তুমি?
কান্না বড়ই বাজে,
এসব ঠুনকো সেন্টিমেন্ট কি,
তোমার কাছে সাজে?”
………………………………………………………………………………………………….
-
-
-
-
__________________________________________________________
-
-
-
-
-
-
-
__________________________________________________________
-
-
_______
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-