কবিতা – “অপারগতা”

কলমে – সুমিতা পয়ড়্যা

……………………..

একটা দিন চেয়েছিলাম তোমার কাছে

ভাবনাটা ছিল অন্যরকম অন্য কোনখানে

অবসর ছিল হয়ত;হয়ত বা  ছিল না

তবে সুযোগ ছিল; সামর্থ্য ছিল

শুধু ছিল না কোন ইচ্ছা; কোন উদ্যোগ

আর মানসিকতার উদার মুক্ত আকাশ!

হয়ত ভাবনায় অন্যরকম অন্য কিছু ছিল।

না পারাটা ধীরে ধীরে বেড়েছে ক্রমশঃ।

রঙিন স্বপ্নের ঘরে আমি হয়ত বেহায়া,নির্লজ্জ

তাই হাতে হাত রাখি; জড়িয়ে ধরতে চাই মন,

বৃষ্টিতে ভিজতে বলি; কাট ফাটা রোদ্দুরে দাঁড় করিয়ে রাখি অনেকক্ষণ,

খুনসুটি আড়ালে হাসির ছলে আলতো ভালোবাসাকে মোড়কে মুড়িয়ে রাখি।

আসলে তো ভুলেই যাই-হোঁচট খেতে খেতে কত শক্ত হয়েছে এ জীবন!

তাই ওই নরম খাটে নরমকেই যে মানায়!

তোমার অপারগতা একাকীত্ব এনে দিয়েছে

তোমার অপারগতা বিষন্নতায় ভরিয়ে দিয়েছে

তোমার অপারগতার পাষাণ হৃদয় আপনকে পর করেছে

অপেক্ষা আর প্রতীক্ষার বিনিদ্র রজনী স্বাগত জানায় নোনা জলে

তোমার অপারগতা দিয়ে প্রতিক্ষণে নতুন করে তোমাকেই সাজাই।

অন্ধ ভালবাসায় সব ইচ্ছে গুলোকে গলা টিপে টিপে মেরে ফেলেছি

কত ভালবাসার প্রাবল্যে নিজের বোধকে বিনাশ করেছি

ক্ষয়িষ্ণু জীবনে ভুলে ভরা সমস্ত অনুভূতি ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে

ভালোবাসি-র প্রতিটি উচ্চারণে এক নিদারুণ অক্ষমতা অনুভব করে

হাজার- কোটি- সহস্রবার চাইলেও তোমাকে নিজের করে পাওয়া যায় না

এক অসম্ভবের অজুহাতের শেকল তোমার হাতেই বাঁধা

কথারা সব যেন অপ্রচলিত ভাষা, দুর্বোধ্য

তাই উচ্চারিত হয় না; কর্ণকূহরে প্রবেশও করে না

তোমার অস্তিত্বের সময় তরণী তোমার একান্ত নিজের;

তাই যখন জোয়ার ভাটায় হৃদয় নদী তোলপাড়

তখন তোমার অপারগতার কাছে ভালোবাসা হার মানে।

হেরে যেতেই হয় ভালোবাসার অনুচ্চারিত ছন্দে

অথচ ভালোবাসার প্রতিটি উচ্চারণের গভীরে তুমি—

শুধু তুমি মিলেমিশে একাকার।

তুমি বয়সের কথা বল; মৃত্যুর সাথে পরিচয় করিয়ে দাও

একই কেন্দ্র বিন্দুর মাঝে দাঁড়িয়ে যে ভালোবাসা-তা তোমার স্বরযন্ত্রে পরিস্ফুটিত

দশ দিকের ছোটা ছুটিতে হয়ত বা রামধনুর রঙে বিগলিত চিত্ত তোমার

তাই সবটাতেই তোমার অপারগতার রঙ মেশাও।

আর আমি, এক নিঃশ্বাসে সবটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে এলোমেলো করে দিই ভয়ে—

আঁকিবুকি কাটি জীবনের সাদা ক্যানভাসে।

কারণ, তোমার অপারগতায় তুমি অপারগ; আমি নই।

Loading