কবিতা – প্রেমে পড়া বারণ
কলমে – সুমিতা পয়ড়্যা
প্রেমে পড়া বারণ কারণ—
আত্ম উন্নয়নে মনোনিবেশ, স্থির লক্ষ্য
উন্নতির শিখরে নিশ্চিত ডাক পাঠাবে সবুজ খামে!
সমিরণে দখিনা বাতাস বয়ে আনবে নীল খামে
বসন্ত জাগ্রত হবে রঙিন মোড়কে
প্রেমিকার প্রেম মিলবে; সম্পর্ক দৃঢ় হবে আত্মপ্রত্যয়ে
উন্নতির পর উন্নতি বয়ে আসবে জীবন তরণীতে। অনুকূল প্রতিকূল সব কুলেতেই ঠাঁই মিলবে সোহাগে, আদরে, ভালোবাসায়।
তাই প্রেমে পড়া বারণ!
এসব ছেড়ে প্রেমে পড়লে প্রেম উড়ে যাবে হওয়ার মত
এক লহমায় ভেঙে যেতে পারে তিল তিল করে গড়ে ওঠা ভালবাসার সাম্রাজ্য।
কতশত স্বপ্নে বিভোর থাকা দিনরাত যন্ত্রণায় দুমড়ে-মুচড়ে একাকার হয়ে যাবে।
অভিজ্ঞতা,উপলব্ধি,অনুভূতি সেই কথাই বলে—
প্রেম যা দেয় তার থেকে বেশি কেড়ে নেয়।
তাই প্রেমে পড়া বারণ।
এক অজানা আশঙ্কা প্রতিক্ষণে গ্রাস করে
বুকে চিনচিনে ব্যথা;নোনা জলের ঝাপসা দৃষ্টি
নির্ঘুম রাত;জাবর কাটা স্মৃতি
ঘূণপোকার মত কুরে কুরে খায়;
যত কোলাহল ছিল জগৎ জুড়ে তা সব নিস্তব্ধ হয়ে যায় এক নিমেষে।
বিশ্বাস হারিয়ে তলানিতে ঠেকে।
স্বপ্নগুলোকে, ইচ্ছেগুলোকে নিরবে নিভৃতে হত্যা করতে হয়।
আর কারণে-অকারণে রেগে যাওয়াটা/ সে তো সেখানে সামান্য কারণ মাত্র।
তাই প্রেমে পড়া বারণ।
প্রেমে পড়া আর উচ্চমাত্রায় ড্রাগ নেওয়া দুটি নাকি এক জিনিস
যেখান থেকে বেরিয়ে আসা খুব কঠিন
প্রেমে পড়ার প্রভাব বেশি দিন স্থায়ী হয় না
আর এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ওষুধের চেয়েও অনেক গুণ বেশি।
পরিমাণ-পরিমাপ ওসব তো বাদের খাতায়—
বিজ্ঞান বলে, ডোপামিন, অক্সিটোসিন, সেরাটোনিন প্রেমের ক্ষরিত হরমোন।
এইসব নিউরো ট্রান্সমিটার মাথার চতুর্দিকে আক্রমণ করে
আর আঘাতে আঘাতে শরীরের বারোটা বেজে তেরোটা করে দেয়।
প্রেমে পড়া বারণ কারণ বিপাক ক্রিয়ার হার কমে যায় প্রেমে পড়া বারণ কারণ ক্ষুধামান্দ্য হাজির হয়
প্রেমে পড়া বারণ কারণ সুস্থ বিচারবোধ নষ্ট হয়ে যায়
প্রেমে পড়া বারণ কারণ অত্যাধিক চিন্তা হাজির হয়
প্রেমে পড়া বারণ কারণ হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়
প্রেমে পড়া বারণ কারণ রক্ত জমাট বেঁধে হৃদস্পন্দন থমকে যেতে চাই।
তবুও কারণে অকারণে মন পাল তুলে ছুটে চলে অবিরাম
তাই ব্যথা-বেদনা-যন্ত্রণার শিকার হতেই হয়।
আসল সত্য প্রেমে পড়লে উঠে দাঁড়ানো কষ্টের
যে প্রেমে পড়ে সে জানে প্রেমের ভয়াবহ রূপ।
তাই কারণে-অকারণ প্রেমে পড়া বারণ।