নিজস্ব প্রতিনিধি – মেঘ পাহাড়ের দেশ সিলারিগাঁও। উঁচু পর্বত, ঘন জঙ্গল, বুনো ফুল, প্রজাপতির ওড়াউড়ি—সব নিয়ে সিলারিগাঁও যেন রূপকথার জগৎ। তিন-চারদিন এখানে আনমনাভাবে কেটে যাবে; টেরই পাবেন না। কালিম্পং থেকে ৩৩ কিলোমিটার দূরত্বে আনুমানিক ৬০০০ ফুট উচ্চতায় জঙ্গল ঘেরা একটি ছোট্ট পাহাড়ি জনপদ। সামনে বিশাল কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং পাইনের জঙ্গল—এক কথায় এটা সিলারিগাঁওয়ের পরিচয়। অনেকে আবার একে আদর করে ‘মিনি দার্জিলিং’ নামেও ডাকেন। অনেকের প্রশ্ন, দার্জিলিং থাকতে সেখানে কেন যাব? কারণ এখানকার আবহাওয়াটা খানিকটা অন্যরকম। সবসময়ই দেখা মেলে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। কাঞ্চনজঙ্ঘা, কাব্রু, জুমলহরি ইত্যাদি বরফঢাকা শৃঙ্গ তো নিত্যদিনের সঙ্গী। সিলারিগাঁওয়ে সূর্যের আলো পড়ে সোনালি আভা ঠিকরে বেরোয়। পাহাড়ি পথ ধরে হেঁটে যেতে পারবেন রামিতে ভিউপয়েন্টে। দেখবেন, পাহাড়ের কোল ঘেঁষে কেমন বয়ে চলেছে তিস্তা! এখানে দাঁড়ালে মনে হবে, যেন খাদের ওপর ঝুলে রয়েছেন আপনি। জঙ্গলের ভেতর রয়েছে একটি দুর্গের ধ্বংসাবশেষ, পুরনো মনাস্ট্রি। ১৬৯০ সালে স্থানীয় লেপচা রাজাদের তৈরি এই দূর্গ ১৮৬৪ সালে অ্যাংলো-ভুটান যুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনার দ্বারা ধ্বংস হয়ে যায়। এখন তারই কিছু ধ্বংসাবশেষ আর নিস্তব্ধতা পড়ে আছে সেখানে। ধ্বংসস্তূপের সামনে বসে নিরিবিলিতে বেড়ে ওঠা বড় ঘাসের জঙ্গলের হাঁটতে হাঁটতে অনুভব করা যায় সেই সময়কে!
সিলারিগাঁও যেতে চাইলে প্রথমে পৌঁছতে হবে নিউ জলপাইগুড়ি। হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত অনেকগুলো ট্রেন আছে। এরপর নিউ জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছতে হবে সিলারিগাঁও। তবে, করোনাকালে কোথাও না যাওয়াই ভালো। দূর্যোগ কাটলেই কোথায় ঘুরে বেড়াবেন, এমন পরিকল্পনা করে রাখুন।