শিশু যখন খেতে চায় না

ডঃ অনুপ কুমার মঙ্গল

(শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ)

ফোন: ৯৭৩৪৮৪১১৯০

শিশুসন্তান একদমই খেতে চায় না, খাবার দিলেই ফেলে দেয়, খাচ্ছে কিন্তু বাড়ছে না—এ ধরনের নানা অভিযোগ করে থাকেন মায়েরা।

এ বিষয়ে অনেকে ভুল ধারণা নিয়ে বসে আছেন। জেনে নিন, শিশুদের খাওয়ানোর সঠিক পদ্ধতিগুলো—

* এতটুকু বাচ্চা, ও কি আর চিবুতে পারবে—এই ভেবে মায়েরা শুরুতে একেবারে তরল বা ব্লেন্ড করা খাবার দিতে শুরু করেন। কিন্তু পাতলা তরল খাবারের পুষ্টিমান কম, সহজে হজম হয়ে যায় বলে বেশিক্ষণ শরীরে থাকেও না। আর শক্ত দানাদার খাবার না খেলে শিশুর স্বাদ-ইন্দ্রিয়ও পরিপক্ব হয় না। ফলে তাদের পেট ভরে না, ওজনও বাড়ে না। তাই শুরু থেকেই একেবারে পাতলা খাবার না দিয়ে নরম খিচুড়ি, চটকানো ভাত বা কলাজাতীয় খাবার দিন।

* সারা দিন ধরে একটু পরপর খাওয়ানোও মায়েদের অভ্যাস। খিদে না পেলেও অনেকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। ছয় মাস বয়সের পর থেকে শিশুকে ঘন করে তৈরি করা খাবার আধা বাটি পরিমাণ দুই বেলা খাওয়ালেই চলে। আট মাসের পর এটা তিন বেলা দেবেন। ছয় মাসের পর থেকে সব খাবারই ধীরে ধীরে দেওয়া যাবে।

* বয়স এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগে গরুর দুধ দেওয়া যাবে না। দুধ, জল বা জুস খাওয়ানোর সময় ফিডার নয়, বাটি-চামচ ব্যবহার করতে হবে। একটু বড় শিশুরা গ্লাস ব্যবহার করতে শিখবে।

* টিভি দেখিয়ে, গেম বা ভিডিও চালিয়ে মনোযোগ সরিয়ে দিয়ে শিশুর মুখে খাবার গিলিয়ে দেওয়ার প্রবণতা আজকাল বেশি দেখা যায়। কিন্তু খাওয়ার সময় খাবারটাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন নতুন স্বাদের বৈচিত্র্যময় খাবার তৈরি করুন, যাতে শিশুরা সেটা খেয়ে আনন্দ পায়।

* একটু বড় হলে শিশুকে পরিবারের সবার সঙ্গে বসিয়ে খাওয়াতে হবে। সে যেন নিজের হাতে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারে, সে জন্য সাহায্য করুন। নিজে খেতে পারবে না ভেবে অনেক বেশি বয়স পর্যন্তও মায়েরা শিশুকে খাইয়ে দেন। এটা ঠিক নয়।

Loading