পিঠের দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

অনেকেই বহুদিন ধরে পিঠের ব্যথায় ভুগছেন। আর পিঠে ব্যথার বিভিন্ন কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে স্ক্যাপুলা কোস্টাল সিনড্রোম।

এটা এক ধরনের ব্যথা, যা পিঠের ওপরের ভাগের মেরুদণ্ডের যেকোনো এক পাশে অথবা দুই পাশেই হতে পারে। এই ধরনের ব্যথা আমাদের কাঁধের নড়াচড়ার সঙ্গে বেশি অনুভূত হয়। এই ব্যথা মাথার পেছনের অংশে, হাতে, এমনকি আঙুল অবধি আসতে পারে। এ ধরনের ব্যথা বুকের পাঁজরেও হতে পারে, যা কি না আমাদের হার্টের ব্যথা বলে মনে হতে পারে। এ ধরনের সমস্যায় অনেক সময় ব্যথা কাঁধ থেকে বাহু ও হাত পর্যন্ত চলে আসে , কখনো আবার এই ব্যথা মেরুদণ্ডের উপরিভাগের রগে চাপজনিত সমস্যা মনে হতে পারে।

কেন এই ধরনের ব্যথা?

যাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটারে কজ করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ব্যথা হতে পারে। যাঁরা দিনের বেশির ভাগ সময় পেশাগত কারণে পিঠ এবং পাঁজরের অস্বাভাবিক নড়াচড়া করে থাকেন, তাঁদের এই ধরনের ব্যথা হতে পারে। পিঠে কোনো আঘাতজনিত ঘটনা থাকলে দীর্ঘদিন পর এ ধরনের ব্যথা হতে পারে। যাঁরা থাইরয়েড ও ডায়াবেটিসজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের এ ধরনের সমস্যা হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।

চিকিৎসা পদ্ধতি

প্রথম দিকে ব্যথা অল্প হওয়ার কারণে অনেকেই বিষয়টি গুরুত্ব দেন না। পরে ব্যথা বেড়ে যায়  এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যথায় রূপান্তরিত হয়। এরপর এই ব্যথা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। তখন ব্যথা একটি মাত্র ওষুধে নিরাময় হয় না। এর জন্য প্রয়োজন হয় একাধিক ওষুধের। প্রথমদিকে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ আট ঘণ্টা পর পর সাত থেকে ১০ দিন খেয়ে চেষ্টা করা যেতে পারে। পিঠে ব্যথা যদি স্ক্যাপুলা কোস্টাল সিনড্রোমের কারণে হয় তাহলে ব্যায়াম করে এই ব্যথা যাবে না। প্রাথমিকভাবে প্যারাসিটামলের সঙ্গে আরো কিছু ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, যা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে হবে। এই সমস্যাটি থেকে রেহাই পেতে নিয়মিত হাঁটা বা স্বাভাবিক ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই সমস্যাটি শুরু হয়ে গেলে ব্যায়ামের  কারণে অনেক সময় এই ব্যথা বাড়তে পারে। দীর্ঘ মেয়াদে এই ব্যথা থাকলে প্রয়োজনে ইন্টারভেনশন চিকিৎসা নেওয়ার দরকার হতে পারে।

কী কী করণীয়

এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা, সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন করা, নিয়মিত স্ট্রেস বা মানসিক চাপমুক্ত থাকা, একই অবস্থানে দীর্ঘ সময় না থাকা, কম্পিউটার ও মোবাইল ব্যবহারে আসক্ত না হওয়া, পেশাগত কারণে এসব কাজ করতে হবে পিঠ ও ঘাড় সোজা রেখে এবং বিশ্রাম নিয়ে কাজ করা।

 

Loading