নিজস্ব প্রতিনিধি – হারিয়ে যাচ্ছে ‘মরুভূমির জাহাজ’ খ্যাত উট। ২০১২ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ভারতে উট ৩৭ শতাংশ কমে গেছে। বংশপরম্পরায় উট পালন করেন রাজস্থানের রাইকা গোত্রের বনওয়ারলাল। উট তাদের পরিবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। রাইকা গোত্রের কাছে উট এক পবিত্র প্রাণী।
শুকনো মৌসুম শুরু হলেই বনওয়ারলাল ও তার গোত্রের লোক ছাগল, ভেড়া, উট নিয়ে থর মরুভূমিতে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে তাদের গ্রীষ্মকালীন নিবাসে স্থানান্তরিত হয়। কয়েক শতাব্দী ধরে এই আধা যাযাবর জীবনযাপন করছে রাইকা গোত্র। কিন্তু তাদের এই বার্ষিক যাত্রা এখন হুমকির মুখে। কারণ উটের সংখ্যা কমে যাওয়া। ভারতের সব উটই আরবের ড্রমেডারি উটের বংশধর। ড্রমেডারি হলো মানুষ বহনের জন্য বিশেষভাবে প্রজনিত হালকা গড়নের এক-কুঁজওয়ালা দ্রুতগামী উট।
বর্তমানে ভারতে উটের সংখ্যা দুই লাখের কম। এদের ৮০ শতাংশই রাজস্থানের। যাতায়াত, উল সংগ্রহ, দুধ, এমনকি হালচাষের জন্যও উট ব্যবহার করা হয় ভারতের এ রাজে। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ হওয়ায় যান্ত্রিক বাহন বেড়ে গেছে। ফলে মানুষ ও মাল পরিবহনের বাহন হিসেবে একেবারেই কমে গেছে উটের ব্যবহার। আবার কৃষিক্ষেত্রে নানা সেচ প্রকল্প চালু হওয়ায় এবং সৌর কৃষির প্রবর্তন হওয়াতেও উটের চাহিদা অনেক কমে গেছে। একসময় রাজস্থানে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিল উট উৎসব। এ উৎসবও এখন বলতে গেলেই বন্ধ হয়ে গেছে।
এ ছাড়াও করোনা মহামারির সময় ধস নেমেছে পর্যটন খাতে। এর ফলেও উটের ব্যবহার ও চাহিদা কমে গেছে অনেক। ২০১৫ সালে রাজস্থান সরকার মদ্দা উট রপ্তানি ও বিক্রি নিষিদ্ধ করে আইন জারি করে। সেইসঙ্গে উটের মাংস বিক্রিও নিষিদ্ধ করা হয়।