নিজস্ব প্রতিনিধি – ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ চলার সময়ই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছিলেন, তৃতীয় ঢেউয়ে রেহাই পাবে না শিশুরা। প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি সমান তালে বাড়বে তাদের ঝুঁকি। বিশেষজ্ঞদের ওই বক্তব্যের সঙ্গে একমত সেদেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তৈরি হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি। তারা বলছে, ভারতের একাধিক রাজ্যে ‘আর ভ্যালু’ (এক জন আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে কত জন সংক্রমিত হতে পারে) গত জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ‘১’-এর উপর উঠে এসেছে। ইতিমধ্যেই ভারতে শুরু হয়েছে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ। এই পরিস্থিতিতে শিশুদের বিশেষত কোমর্বিডিটি (নানা রকম অসুখ-বিসুখ) থাকা শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ মোকাবিলায় ও চিকিৎসা-পরিকাঠামোর উন্নতিতে কী কী পদক্ষেপ জরুরি, সেই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই রিপোর্টে। দেশের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে শিশু-চিকিৎসকদের ঘাটতি ৮২ শতাংশ ছুঁয়েছে। কোমর্বিডিটি থাকার কারণে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে সংক্রমিত হওয়া ৬০-৭০ শতাংশ শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। কোভিড থেকে সুস্থ হওয়ার পরও তাদের অনেকের মধ্যে বেশ কিছু শারীরিক সমস্যাও দেখা দিয়েছে। রিপোর্টে সেই বিষয়টি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, তৃতীয় ঢেউয়ের সময়ে বিপুল সংখ্যক শিশু করোনায় সংক্রমিত হলে তাদের চিকিৎসার জন্য যত সংখ্যক চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসার সরঞ্জাম এবং পরিকাঠামো প্রয়োজন, তা নেই দেশে। শিশুদের চিকিৎসা পরিকাঠামোতে নজর দেওয়ার পাশাপাশি কোমর্বিডিটি থাকা শিশুদের টিকাকরণে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। দেশে প্রাপ্তবয়স্করা পুরোদমে ভ্যাকসিন পেলেও শিশুদের টিকাকরণ এখনও গবেষণার পর্যায়ে থাকায় তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছেই। রিপোর্টে বলা হয়েছে, কিছুটা বাড়ির মতো করেই , শিশুদের জন্য কোভিড ওয়ার্ড গড়ে তোলা যেতে পারে হাসপাতালে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে দ্রুত শিশু-চিকিৎসক নিয়োগে নজর দিতে হবে। সেই সঙ্গে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি নিয়েও ভাবতে হবে।