নিজস্ব প্রতিনিধি – তালেবানের ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে কয়েক হাজার মানুষ দেশ ছেড়েছেন, তার মধ্যে রয়েছেন শতশত সাংবাদিক। আর তার ফলে সে দেশের গণমাধ্যম এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে উঠেছে। কারণ ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবানের শাসনে কোনো আফগান গণমাধ্যমই ছিলো না। তারা টেলিভিশন, চলচ্চিত্র এবং বিনোদনের সব মাধ্যমগুলোতে নিষেধাজ্ঞারোপ করেছিলো। কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যকে বেআইনি বলেও ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো। যারা টিভি দেখতো তাদের সেট ভেঙ্গে দেয়ার সঙ্গে তাদের শাস্তিও দেয়া হতো। ওই চার বছর আফগানিস্তানে কেবলমাত্র একটিই রেডিও স্টেশন ছিলো, ‘ভয়েস অব শরিয়া’, তারা তালেবানের বিভিন্ন খবরা-খবর এবং ইসলামী প্রোগ্রামিং সম্প্রচার করতো। ২০০১ সালে তালেবানের পতনের পর দেশটির গণমাধ্যম আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। মার্কিন সমর্থিত সরকারের অধীনে আফগানিস্তানে বেসরকারী টিভি, রেডিও নেটওয়ার্কসহ আফগান মিডিয়া খাতের ব্যাপক বিকাশ ঘটে। সারা দেশে শত শত নারী পর্দায় এবং পর্দার পেছনে সাংবাদিক, প্রযোজক, উপস্থাপক এবং অভিনয়শিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন।
জাতীয় প্রেস ফেডারেশনের ওয়াচডগ রিপোর্টাস উইদাউট বর্ডার (আরএসএফ) জানিয়েছে, আফগানিস্তানে এখন ৫০টির বেশি টিভি চ্যানেলa, ১৬৫টি রেডিও স্টেশন এবং কয়েক ডজন প্রকাশনা করেছে। ইন্টারনেট এবং সামাজিক মাধ্যম, বিশেষ করে স্মার্টফোনের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি আরো বিস্তৃত হয়েছে।
কাবুলের পতনের পর দোহা এবং আফগানিস্তানের তালেবান কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে এবং সাংবাদিকদের হয়রানি বা ক্ষতি করা হবে না। বিষয়টি স্পষ্ট করতে তালেবানের এক কর্মকর্তা একজন নারী সাংবাদিকে টিভি সাক্ষাতকার দেন। সেখানে নারীর অধিকার এবং সাধারণ ক্ষমাসহ নানা ঘোষণা দেয়া হয়।
কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে কয়েক ডজন টিভি এবং রেডিও আউটলেট সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। শীর্ষ মুখপাত্রের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও তালেবান জঙ্গীরা সম্প্রতি ঘরে ঘরে গিয়ে সাংবাদিকসহ সমালোচকদের তল্লাশি চালাচ্ছেন।
গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রায়াত্ত ব্রডকাস্টার এরটিএ-এর একজন উচ্চপদস্থ নারী সাংবাদিক বলেন, ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন হয়েছে বলে তাকে অফিস থেকে বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয়। আর তাতেই বোঝা যাচ্ছে আমাদের জীবন হুমকির মুখে রয়েছে।