নিজস্ব প্রতিনিধি- আর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে যাবে পৃথিবীর অন্যতম আশ্চর্য! বৃহস্পতিবার এই খবর পাওয়া মাত্র তাজমহলে পৌঁছে গিয়েছিল আগ্রার পুলিশ ফোর্স। বম্ব স্কোয়াড ও স্নিফার ডগের সাহায্যে চলে তল্লাশি। ঘটনার জেরে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল সংলগ্ন এলাকায়। যার জেরে হাজার জনেরও বেশি পর্যটককে বের করে আনা হয় সেখান থেকে।
তবে তল্লাশি চালিয়ে মেলেনি কোনও বোম। আগ্রা জোনের এডিজি রাজীব কৃষ্ণ এদিন বলেন, ‘আমরা কোনও বোমা পাইনি ঘটনাস্থল থেকে। ভুয়া খবর দেয়া হয়েছিল।’ উল্লেখ্য, এদিন বেলা সোয়া ১১টা থেকে ফের পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয় তাজমহল চত্বরে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে তাজমহল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি উড়ো ফোন আসে। অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি জানান তাজমহলে বোম রয়েছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্ফোরণ হবে, এমনটাও জানিয়েছিলেন তিনি। এরপরেই সতর্কতা জারি করা হয় সৌধ চত্বরে। পর্যটকদের বাইরে বের করে আনা হয় দ্রুত। সমস্ত গেট বন্ধ করে দেয়া হয়। আগ্রা পুলিশের একটি টিম এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ’র কর্মকর্তারা এলাকায় তল্লাশি চালান। আনা হয় পুলিশের স্নিফার ডগ। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বম্ব স্কোয়াড। তল্লাশি চালিয়ে তাজমহল চত্বর থেকে একটি ব্যাগ পাওয়া যায়। ওই ব্যাগে বোমা রয়েছে আশঙ্কা করেছিলেন পুলিশ কর্তারা। কিন্তু ব্যাগ থেকে কোনও বোমা পাওয়া যায়নি। এরপরেই যে নম্বর থেকে ফোনটি করা হয়েছিল তাও ট্রেস করতে শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, উত্তরপ্রদেশের ফিরোজাবাদ থেকে এদিন ফোনটি করা হয়েছিল। আগ্রার পুলিশ সুপার (প্রোটোকল) শিব রাম যাদব বলেন, ‘যে ব্যক্তি ফোন করেছিল, সে মিলিটারির প্রতি রাগ থেকেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। সে মিলিটারিতে চাকরির বহু চেষ্টা করেও তা পায়নি। ফলত দীর্ঘদিন ধরেই সেনার উপর রাগ জমেছিল তার মধ্যে।’
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়। অতীতেও তাজমহলে বোমা রয়েছে, এই ধরনের খবর জানিয়ে ফোন করা হয়েছিল। সেই সময়েও পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীরা তল্লাশি চালিয়ে দেখেছিলেন বিষয়টা ভুয়া। সেইবারও ঘটনাস্থলে আনা হয়েছিল স্নিফার ডগ। তবে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কিন্তু কোনো বোমা মেলেনি। সেই জন্য সার্চ অপারেশন বন্ধ করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ছ’মাস বন্ধ থাকার পর গত বছর সেপ্টেম্বরে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয় তাজমহল। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া আটকাতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল তাজমহলের দরজা। তবে বেশ কিছু বিধিনিষেধ মেনেই এখনও তাজমহল দর্শন করতে হচ্ছে পর্যটকদের। নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন মাত্র পাঁচ হাজার পর্যটককে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে। দুপুর ২টার আগে যেতে পারেন আড়াই হাজার এবং ২টার পর থেকে বাকি সময় আরও আড়াই হাজার পর্যটককে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।