কুশল সেন (বিশেষ প্রতিনিধি)- ঘরের বাইরে বের হলেই ফাস্টফুড খেতে ইচ্ছে করে অনেকেরই! বিশেষ করে বার্গার-পিজ্জা খেতে ছোট-বড় সবাই পছন্দ করেন। তবে মুখরোচক এই খাবারগুলো যতই সুস্বাদু হোক না কেন, তা শরীরের জন্য মোটেও ভালো নয়। এজন্য ফাস্টফুডজাতীয় খাবার পরিহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। তবুও স্বাদের খাতিরে সবাই কমবেশি এসব খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন। যা কমিয়ে দিচ্ছে আয়ু। জানেন কি, নিয়মিত বার্গার-পিজ্জাসহ ফাস্ট ফুডজাতীয় মুখরোচক সব খাবার খেয়ে নিজের অজান্তেই ফুরিয়ে ফেলছেন আপনার আয়ু। এমনই তথ্য প্রকাশ করেছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি এসব খাবার কমিয়ে দেয় আয়ু।

গবেষণার তথ্য বলছে, হটডগ স্যান্ডউইচে যদি ৬১ গ্রাম প্রক্রিয়াজাত মাংস থাকে, তা একজন ব্যক্তির জীবনের ৩৬ মিনিট কমিয়ে দিতে পারে। হটডগে উপস্থিত পলিউনস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ফাইবার থাকলেও এটি জীবনের আয়ু ৩৬ মিনিট পর্যন্ত কমিয়ে দেয়। অন্যদিকে, পিনাট বাটার ও জ্যাম স্যান্ডউইচ খেলে আয়ু ৩০ মিনিটেরও বেশি বাড়তে পারে। আবার যদি কেউ পিজ্জাসহ বেকন এবং বার্গারের মতো খাবার খায়, তাহলেও জীবনের আয়ু কমে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পিজ্জা খেলে একজন ব্যক্তির জীবনের প্রায় ১০ মিনিট ফুরিয়ে যায়। সম্প্রতি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা কার্বন ফুটপ্রিন্টস এবং পুষ্টির ভিত্তিতে কিছু খাদ্য সামগ্রী বিশ্লেষণ করে এমনই তথ্য প্রকাশ করেছেন। নেচার ফুড জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি। গবেষণার তথ্য অনুসারে, বাদাম খেলে ২ মিনিটের বেশি আয়ু যোগ হয়। সেইসঙ্গে কলা খেলে আয়ু বাড়বে ১৩ মিনিট বৃদ্ধি করে। আয়ু বাড়ানোর তালিকায় আরও খাবার আছে। যেমন- টমেটো সাড়ে ৩ মিনিটের বেশি আয়ু বাড়ায়। অন্যদিকে অ্যাভোকাডো জীবন বাড়ায় ২ মিনিট ৪ সেকেন্ড। তবে যেকোনো ধরনের কোমল পানীয় খেলে আয়ু কমবে ১২ মিনিট ৪ সেকেন্ড। পুষ্টিকর ও আয়ু বাড়াবে এমন খাবারের তালিকায় স্যামন মাছ সবুজ স্কোর পেয়েছে। তথ্য অনুসারে, স্যামন মাছ একজনের জীবন ১৬ মিনিট বাড়িয়ে দিতে পারে। গবেষণায় পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এই গবেষণায় শুধু স্বাস্থ্যকর জীবন সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা নয়,পরিবেশের ওপরও ভালো প্রভাব ফেলতেও সাহায্য করবে। গবেষকরা প্রতিটি খাবারকে রেটিং দিয়েছেন। যা জানান দেয় কোন খাবার কম খাওয়া উচিত আর কোনটি বেশি। এই গবেষণার প্রধান গবেষক ক্যাটরিনা স্টাইলিয়ানুর জানান, উদ্ভিদভিত্তিক খাবারের কর্মক্ষমতা আরও বেশি। উদ্ভিদভিত্তিক খাদ্য এবং প্রাণীভিত্তিক খাদ্য একে অপরের থেকে খুব আলাদা।

Loading