নিজস্ব প্রতিনিধি – করোনা নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা আর ভীতি বাড়ছেই। বিশ্বের দেশে দেশে প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সারি দীর্ঘ হচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিন আবিষ্কার করলেও সব দেশে তার সরবরাহ পর্যাপ্ত নয়। কিছু ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়েও মাঝেমধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। ভারতেও করোনার সংক্রমণ ভয়াবহভাবে আবার বাড়ছে। করোনা নামক ভাইরাসটি একজন মানুষের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে কীভাবে ছড়ায়, এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি। তবে বরাবরের মতোই সাধারণ কিছু সাবধানতা অবলম্বনের ওপরই জোর দিচ্ছেন তারা। যেসব সাবধানতা একজন ব্যক্তিকে আক্রান্ত হওয়া থেকে অনেকটাই ঝুঁকিমুক্ত রাখতে পারে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দেয়া এরকমই ৭টি সাবধানতা তুলে ধরা হলো-
১. গণপরিবহন:
বাস, ট্রেন কিংবা অন্য কোনও গণপরিবহনের হাতল কিংবা আসনে করোনা ভাইরাস থাকতে পারে। তাই গণপরিবহন এড়িয়ে চলা বা সতর্কতার বিষয়ে জোর দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি গণপরিবহনে চলতেই হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্ক পরা ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করা উচিত।
২. কমক্ষেত্র:
করোনা সংক্রমণের একটা বড় ক্ষেত্র হচ্ছে কর্মস্থল। অফিসে একই ডেস্ক কিংবা কম্পিউটার ব্যবহারে সংক্রমণ ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁচি-কাশি থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ায়। যেকোনও জায়গায় এ ভাইরাস কয়েক ঘণ্টা, এমনকি কয়েকদিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। ফলে অফিসের ডেস্কে বসার আগে কম্পিউটার, কিবোর্ড ও মাউস পরিষ্কার করে নিতে হবে।
৩. জনসমাগমস্থল:
করোনার সংক্রমণ রোগে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়ে শুরু থেকে বলা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেসব জায়গায় মানুষ বেশি জড়ো হয়, সেসব স্থান এড়িয়ে চলা বা বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এরমধ্যে খেলাধুলার স্থান, সিনেমা হল কিংবা মন্দির মসজিদ-উপাসনালয়ও রয়েছে।
৪. ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান:
করোনাকালীন অন্য সবকিছু বন্ধ থাকলেও সীমিত পরিসরে আর্থিক লেনদেন সচল রাখা হয়। অনেক সময় ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গ্রাহকরা একই কলম বহুজনে ব্যবহার করেন। করোনায় আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির ব্যবহৃত কলম পরবর্তীতে সুস্থ কেউ ব্যবহার করলেও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। সেজন্য ব্যক্তিগত কলম নিয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যেতে হবে। এছাড়া এটিএম বুথ থেকেও সংক্রমণ ছড়ায়। কারণ বুথের একই বাটন বহু লোক ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
৫. লিফট:
করোনা সংক্রমণের আরেকটি জায়গা হচ্ছে বাড়ি কিংবা অফিসের লিফট। লিফট ব্যবহারের সময় নির্ধারিত ফ্লোরে যাবার জন্য লিফটের বাটন অনেকে ব্যবহার করেন। একই বাটনে একাধিক ব্যক্তির আঙুলের স্পর্শ থেকে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৬. টাকা-পয়সা: টাকা-পয়সাকে বলা হয় ‘হাতের ময়লা’। আসলে এই টাকা-পয়সাতেই সবচেয়ে বেশি জীবাণু লেগে থাকে। কারণ টাকা-পয়সা সবসময়ই এক হাত থেকে অন্য হাতে যায়। এতে করে অতীতেও নানা সংক্রামণ রোগ ছড়ানোর নজির রয়েছে।
ফলে করোনার সংক্রমণ ঝুঁকি কমাতে টাকা-পয়সা লেনদেনের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত সাবধান থাকতে হবে।
৭. শুভেচ্ছা বিনিময়:
আমরা সবসময়ই করকর্মনের মধ্য দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করি। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত এমন কোনও ব্যক্তির সঙ্গে হ্যান্ডসেক কিংবা কোলাকুলি করলে সুস্থ ব্যক্তিও আক্রান্ত হতে পারেন। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা এই করোনাকালীন করমর্দন বা কোলাকুলি না করার পরামর্শ দিচ্ছেন।