করোনা মহামারীতে ঘরে থাকার কারণে আমাদের অনেকের ওজন বেড়ে যাচ্ছে। মহামারীর কারণে এমন একটি লাইফস্টাইল তৈরি হয়েছে যা আমাদের বাড়ির চার দেয়ালের মধ্যে থাকতে বাধ্য করেছে। খুব কম চলাফেরা, শারীরিক শ্রম না করার কারণে আপনার ওজন বেড়ে যাওয়া অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। আমাদের প্রতিদিনের রুটিন বিঘ্নিত হয়েছে, মানসিক চাপ বেড়েছে। মানুষের খাদ্যাভ্যাস, কাজ করার পরিমাণ, ঘুমের অভ্যাস পরিবির্তত হয়েছে।
সঠিক ওজন শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপনার যদি অতিরিক্ত ওজন বা ওবেসিটি থাকে, তাহলে আপনার হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, পিত্তথলির পাথর, শ্বাসকষ্ট এবং নির্দিষ্ট কিছু প্রকারের ক্যান্সারের মতো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেশি বাড়ে। স্থূলতা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যেও সমস্যা তৈরি করে যেমন- উদ্বেগ, বিষণ্নতা ইত্যাদি। আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে তা আপনাকে সতেজ এবং শক্তিশালী থাকতে সাহায্য করবে। পাশপাশি আপনার স্বাস্থ্য এবং মানসিক অবস্থার ওপরও স্বাস্থ্যকর প্রভাব ফেলবে।
সঠিক খাবার খাওয়া-
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ওজন নিয়ন্ত্রণের প্রথম এবং প্রধান চাবিকাঠি। আপনার খাবারে যদি ক্যালোরির পরিমাণ ঠিক থাকে তাহলেই খাদ্যাভ্যাসের জন্য অর্ধেক কাজ শেষ। এছাড়া ফাইবার, প্রোটিন এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা ওজন বৃদ্ধি রোধ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। ইউনিভার্সিটি অব লিডস-এর সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় আমন্ডকে এমনই একটি খাদ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ব্রেকফাস্ট হিসেবে যারা আমন্ড খেয়েছে তারা সামগ্রিকভাবে নিজেদের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। আমন্ড খাওয়ার কারণে অন্যান্য উচ্চ-চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার ইচ্ছা অনেকটাই প্রশমিত হয়ে যায়। যা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যায়াম করা-
যদি আপনি ওজন কমাতে চান তাহলে ব্যায়াম করা এবং হাঁটাচলা আবশ্যক। সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিটের একটি ব্যায়ামের রুটিন বজায় রাখুন। অতিরিক্ত ওজন কমানোর পাশাপাশি, ব্যায়াম পেশীর ভর বৃদ্ধি, বিপাক বৃদ্ধি এবং একটি সুস্থ হৃদয় বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি আপনার শরীরে এন্ডোরফিন বা হ্যাপি হরমোন নিঃসরণ করে যা আপনার মেজাজকে উন্নত করে।
যথাযথ ঘুম-
আপনার শরীরের দৈনন্দিন পরিশ্রম থেকে শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। ঘুমের অভাব আপনার বিপাকীয় হার হ্রাস করে এবং ইনসুলিন প্রতিরোধের কারণও হতে পারে। যার কারণে এটি ক্ষুধা বাড়িয়ে দিতে পারে। হরমোনের উৎপাদনে হস্তক্ষেপ করে মানসিক সুস্থতা হ্রাস করতে পারে, যা আপনার অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার প্রবণতা তৈরি করে।