নিজস্ব প্রতিনিধি- মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে আহত হওয়ার পরই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক ভণ্ডামি করছেন। কিন্তু কংগ্রেস হাইকম্যান্ড এই বিষয়ে অধীরের মতকে সমর্থন করছে না। তারা মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত আরোগ্য চেয়েছে। দলের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, এটা প্রদেশ সভাপতির ব্যক্তিগত মন্তব্য। অমরিন্দর সিং, অশোক গেহলটের মতো মুখ্যমন্ত্রীরা দাবি তুলেছেন, দোষীদের ধরতে হবে। এমনকী নাম না করে মনীশ তিওয়ারির মতো নেতারা অধীরের সমালোচনা করে বলেছেন, আজকালকার নেতারা রাজনৈতিক সৌজন্যে বিশ্বাস করে না।

এমনিতে অধীর সবসময়ই রাখঢাক না করে খুব খোলাখুলি কথা বলেন। কেন্দ্রীয় নেতারা অন্য লাইন নিলেও তিনি বলেছেন, ”ক্ষমতাসীন দল থেকে গুজব রটানো হলো যে, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হামলা হয়েছে, ষড়যন্ত্র হয়েছে, তাকে মারার চেষ্টা হয়েছে। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন, এটা সর্বশক্তিমানের কাছে প্রার্থনা করছি। কিন্তু এটাও বলছি, কেন এই ধরনের গুজব রটানো হচ্ছে? মানুষের আবেগকে কাজে লাগানোর জন্য মিথ্যা খবর করানোর চেষ্টা কেন?”

কিন্তু অমরিন্দর, গেহলতরা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। ফলে এখানে অধীরের সঙ্গে দলের মতের ফারাক সামনে আসছে। তবে এটা নতুন নয়। পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে বারবার কংগ্রেসে এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। সনিয়া গান্ধী দিল্লিতে বৈঠক করলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেখানে চান। কংগ্রেস হাইকম্যান্ড সবসময়ই স্পষ্ট করে দিয়েছে, তাদের প্রধান শত্রু হলো বিজেপি। সে জন্য ও কেন্দ্রীয় স্তরে বিরোধী জোটের খাতিরে মমতার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক বিরোধিতার রাস্তায় যেতে চায় না। কিন্তু রাজ্য নেতাদের মতে, বিজেপি-র পাশাপাশি তৃণমূলের বিরোধিতা না করলে রাজ্যে দলকে বাঁচানো যাবে না।

প্রবীণ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভাশিস মৈত্র মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গে তো কংগ্রেসটাই প্রায় তৃণমূলে চলে গেছে। নেতা গেছেন, ভোট গেছে। সামান্য কিছুটা এখন কংগ্রেস হিসাবে আছে। ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন,  কোনো সন্দেহ নেই, অধীর ভালো নেতা। মুর্শিদাবাদে তিনি সব চেয়ে বড় শক্তি। কিন্তু তিনি এখনো পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে দলকে টেনে তোলার জায়গায় নেই। ফলে অধীর কী বলছেন তার খুব বেশি প্রভাব হবে না।

Loading