নিজস্ব প্রতিনিধি- মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে দ্বিতীয় পর্বে বাঁকুড়ার ১২ টি বিধানসভা কেন্দ্রের বাকি আট কেন্দ্রের নির্বাচনী প্রচার। রাত পোহালেই ওই কেন্দ্রগুলিতে ভোট। ১৯৪৬১২০ জন ভোট দাতা ৫৪ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারন করবেন। ভোট পরিচালনায় নির্বাচন কমিশন সমস্ত ধরণের প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে। এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্যানুযায়ী ওই আট কেন্দ্রে ১৬১ কোম্পানী কেন্দ্রীয় বাহিনী ও ৫৫২২ জন রাজ্য পুলিশ নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন রয়েছেন। একই সঙ্গে ৪২ টি নাকা পয়েন্টে তল্লাশি চলবে। এবার জেলার আট কেন্দ্রের যুযুধান তিন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের সঙ্গে পরিচয় করে নেওয়া যাক। প্রথমেই ‘তালডাংরা’র দিকে চোখ রাখি। এখানে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের মেন্টর অরুপ চক্রবর্ত্তী। সিপিআইএম প্রার্থী এখানকার দীর্ঘদিনের বিধায়ক মনোরঞ্জন পাত্র। বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দিতার আসরে রয়েছেন শ্যামল সরকার ওরফে বেনু।

‘বাঁকুড়া’য় তৃণমূল প্রার্থী করেছে চিত্রাভিনেত্রী সায়ন্তিকা ব্যানার্জীকে। সংযুক্ত মোর্চার তরফে কংগ্রেস প্রার্থী রাধারাণী ব্যানার্জী। বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন নীলাদ্রি শেখর দানা।  ‘বড়জোড়া’ – তৃণমূলের অলোক মুখার্জী। সিপিআইএমের বিদায়ী বিধায়ক সুজিত চক্রবর্ত্তী। বিজেপি এখানে প্রার্থী করেছে দলের মহিলা নেত্রী সুপ্রীতি চ্যাটার্জীকে।

‘ওন্দা’- বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল ফের প্রার্থী করেছে বিদায়ী বিধায়ক অরুপ খাঁকেই। বাম-সংযুক্ত মোর্চার তরফে এই আসনে ফরওয়ার্ড ব্লকের হয়ে তারাপদ চক্রবর্ত্তী ও বিজেপি প্রার্থী অমরনাথ শাখা প্রতিদ্বন্দিতার আসরে রয়েছেন।  ‘বিষ্ণুপুর’- কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী অর্চিতা বিদ্। সংযুক্ত মোর্চার তরফে কংগ্রেসের টিকিটে দেবু চ্যাটার্জী ও বিজেপির তন্ময় ঘোষ প্রার্থী হয়েছেন।  ‘কোতুলপুরে’ – তৃণমূলের সঙ্গীতা মালিক, সিপিআইএমের অক্ষয় সাঁতরা ও বিজেপি হরকালী প্রতিহারকে প্রার্থী করেছে।

 ‘ইন্দাসে’ – তৃণমূল বিধায়ক প্রয়াত গুরুপদ মেটের স্ত্রী রুনু মেটেকে প্রার্থী করেছে। সিপিআইএম নয়ন শীল ও বিজেপির তরফে নির্মল ধাড়া প্রার্থী হয়েছেন। সবশেষে ‘সোনামুখী’- এখানে তৃণমূল জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা ওই দলের প্রার্থী। সিপিআইএম প্রার্থী বিদায়ী বিধায়ক অজিত রায়। বিজেপির হয়ে লড়াইয়ের আসরে রয়েছেন দীবাকর ঘরামী। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া জেলার যে আটটি কেন্দ্রে নির্বাচন রয়েছে তার মধ্যে তিনটি ছিল চারটি ছিল বাম-কংগ্রেসের দখলে। বড়জোড়া ও সোনামুখীর সিপিআইএম প্রার্থীদের বাদ দিলে কংগ্রেসের দখলে থাকা বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর এই দুই কেন্দ্রের বিধায়ক উন্নয়নের জোয়ারে গা ভাসিয়ে শাসক শিবিরে নাম লেখান। যদিও ঐ দলবদলু বিধায়কদের এবার ভরসা করতে পারেনি তৃণমূলও। তাই দু’জনের কেউই টিকিট পাননি। তবে গত ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে জেলার ১২ টি কেন্দ্রেই এগিয়ে বিজেপি। ফলে শাসক দল যেমন চাপে রয়েছে, তেমনি সমানভাবে চাপে রয়েছে বাম-কংগ্রেসও। তৃণমূলের গড় রক্ষা, অন্যদিকে বাম-কংগ্রেস নিজেদের দখলে থাকা চার আসন ফের ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর বিজেপির তরফেও ২০১৯ র লোকসভা ভোটের ফলাফলের পূনরাবৃত্তির আশায় আদা জল খেয়ে আসরে নেমে পড়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। সবমিলিয়ে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা এখানে প্রবল। শেষ হাসি হাসবেন কোন আট জন? উত্তর জানা নেই কারো। উত্তর মিলবে আরো এক মাস পর আগামী ২ মে ইভিএম খোলার পর। এখন সেই সময় টুকুর জন্য অপেক্ষা সকলের।

Loading