নিজস্ব প্রতিনিধি – ফের মুখ খুললেন প্রশান্ত কিশোর। এবার সরাসরি ক্যামেরার সামনে। এবং জানিয়ে দিলেন, এরাজ্যে বিজেপি শক্তিশালী হলেও শেষ বাজি জিতবেন মমতা।
প্রশান্ত কিশোরের ক্লাবহাউস চ্যাট নিয়ে নির্বাচন চলাকালীন রাজ্য রাজনীতিতে এখনও বিতর্কের আঁচ কমেনি। শনিবার বিজেপি নেতা অমিত মালব্যর করা একটি টুইটার পোস্টে শোনা গিয়েছিল একটি অডিও ক্লিপের অংশবিশেষ। সেখানে প্রশান্ত কিশোরের গলায় শোনা গিয়েছিল এ রাজ্যে বিজেপি বিভিন্ন কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং তৃণমূল বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। সেটি যে তাঁরই গলা ছিল সেকথাও স্বীকার করে নিয়েছিলেন তিনি। সেই অডিও প্রকাশ্যে আসতেই নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ের সামনে প্রশ্নচিহ্ন উঠে যায়।
সোমবার প্রশান্ত কিশোর সরাসরি জানিয়ে দিলেন, বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এক প্রবল শক্তি ঠিকই, তা সত্ত্বেও এই জিতবেন মমতাই। এদিন জাতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তৃণমূলের ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর এই বক্তব্যের স্বপক্ষে দাবি করেন। এক বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমে তিনি জানান, বিজেপি যথেষ্ট শক্তিশালী দল সেই বিষয়ে সন্দেহ নেই। গত চার দফা নির্বাচনে, অনেকে মনে করছেন তৃণমূল কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়েছে, সেই বিষয়ে তিনি একমত। কিন্তু সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে তৃণমূল এখনও তাদের জয় ধরে রেখেছে। পিকের কথায়, এবারের নির্বাচনে একটি বড় ফ্যাক্টর একমাস ধরে চলা সুদীর্ঘ নির্বাচনি আবহ। কমিশন এবারের বঙ্গ নির্বাচনকে আটটি পর্বে ভাগ করেছে যা বেনজির ও বিতর্কিত পদক্ষেপ। প্রথম চারটি দফায় সেই সমস্ত নির্বাচনি ক্ষেত্রগুলিকে ফেলা হয়েছে, ২০১৯-এর ফলাফল বিচার করলে সেখানে গেরুযা শিবিরের আধিপত্য বেশি। বিজেপি সেখানে তার লাভ ওঠাবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এটাও মাথায় রাখা উচিত বিজেপির কাছে সহজ আসনগুলিতেও দেখা যাচ্ছে তারা কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছে। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফ্যাক্টর হয়ে যাচ্ছেন। পিকের মতে, যে দলটি দশ বছর ধরে কোনও রাজ্যে ক্ষমতায় আছে তার বিরুদ্ধে নানান মতামত ও বিরোধিতাও সৃষ্টি হয়। তৃণমূল এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। তবে এই সমস্ত ক্ষোভ মূলত তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে, তৃণমূলনেত্রীর বিরুদ্ধে নয়। এখনও পর্যন্ত বাংলায় জনপ্রিয়তা, আস্থা ও ভালোবাসার স্থানে রয়েছেন মমতাই। পিকের দাবি, আমাদের উদ্দেশ্য একটাই। রাজ্য নির্বাচনে কম করে ৪৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত করা। তাঁর দাবি, রাজ্যের মহিলাদের জন্য প্রচুর প্রকল্প খুলেছেন মমতা। মহিলারা এর ফলে লাভবান হয়েছেন। পিকে জানান, গত চারটি দফায় ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। রাজ্যজুড়ে মহিলারা মুক্তহস্তে মমতাকে ভোট দিয়েছেন। এর আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে মহিলা মহলে এত জনপ্রিয় হতে দেখা যায়নি। নিঃসন্দেহে তিনি এখন পর্যন্ত বাংলায় সবচেয়ে শক্তিশালী প্রার্থী যাকে এই ভোটে হারানো অসম্ভব বলে জানান পিকে।
সূএ:উওরবঙ্গ সংবাদ