নিজস্ব প্রতিনিধি – একদিকে দল দুর্বল হচ্ছে। অন্যদিকে কংগ্রেসের শীর্ষস্থান থেকে আলগা হচ্ছে গান্ধীদের রাশ। তা না হলে যে ২৩ জন বিদ্রোহী নেতানেত্রী মাত্র কয়েকমাস আগেই একটি চিঠি লিখে কংগ্রেসের অন্দরে হুলুস্থুল ফেলে দিয়েছিলেন, শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে একপ্রকার গান্ধীদের নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন, এখন কিনা তাঁদেরই দলের গুরুত্বপূর্ণ সব পদে বসাতে হচ্ছে কংগ্রেসকে।

আসলে সংসদের বাদল অধিবেশনের জন্য লোকসভা এবং রাজ্যসভার সাংসদদের নিয়ে একটি করে নীতি নির্ধারক কমিটি গড়ে দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল এই কমিটিগুলিতে গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ নেতারাও যেমন আছেন, তেমন দলের অন্দরের বিদ্রোহী শিবিরের বেশ কয়েকজন নেতাও আছেন। সোনিয়ার নির্দেশ অনুযায়ী অধিবেশন চলাকালীন এই ৭ সদস্যের কমিটিগুলিই দলের নীতি নির্ধারণ করবে। প্রতিদিন আলাদা আলাদা বৈঠক হবে। প্রয়োজনে দুই কক্ষের সদস্যরা একসঙ্গেও বৈঠক করতে পারেন। সোনিয়ার নির্দেশে লোকসভা থেকে গঠিত কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন মণীশ তিওয়ারি, শশী থারুরের মতো বিদ্রোহী শিবিরের নেতারা। নতুন কমিটিতে তেমন বড় চমক না থাকলেও দলের লোকসভার দলনেতা পদে বহাল রাখা হয়েছে অধীর চৌধুরীকেই। অসমের গৌরব গগৈ আগের মতোই থাকছেন কংগ্রেসের লোকসভা সাংসদদের উপনেতা। লোকসভায় দলের চিফ হুইপ থাকছেন কেরলের কে সুরেশ। দলের হুইপ পদে বহাল থাকছেন রবনীত সিং বিট্টু এবং মানিকম ঠাকুর। রাজ্যসভায় এই কমিটিতে রয়েছেন আনন্দ শর্মার মতো সাংসদ, যিনি কিনা বিদ্রোহী শিবিরের অন্যতম নেতা। তিনি ছাড়াও কমিটিতে রয়েছেন অম্বিকা সোনি, জয়রাম রমেশ, পি চিদ্মবরম, দিগ্বিজয় সিং, এবং কে সি বেণুগোপাল। রাজ্যসভার কমিটির মাথায় থাকছেন বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে। যখন এই দুই কমিটি একসঙ্গে বৈঠকে বসবে, তখন কনভেনর থাকছেন খাড়্গে। সোনিয়ার এই বিদ্রোহীদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়াটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সদ্যই রাহুল গান্ধী একপ্রকার খোলাখুলি দলের অন্দরের বিদ্রোহীদের দল ছেড়ে চলে যাওয়ার বার্তা দিয়েছেন। তারপরই সোনিয়া তাঁদের কাছে টানলেন।

 138 total views,  2 views today