নিজস্ব প্রতিনিধি – ভ্রমণপিয়াসী মানুষ প্রতিদিনই নতুন নতুন স্থানে ছুটে বেড়ান। নতুন জায়গায় নতুন পরিবেশ আর অচেনা প্রকৃতি সত্যিই মানুষকে জীবনের অন্য এক স্বাদ এনে দেয়। মানুষ অচেনার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে ও রহস্যঘেরা এই পৃথিবীকে নতুন করে আবিষ্কার করতে চায়। বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হাজারো দর্শনীয় স্থান। যেসব স্থানে প্রতিবছর দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে থাকে। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং সেসব স্থানগুলোরই একটি। চারপাশে সাদা সাদা বরফ। কাছ থেকে দেখলে মনে হবে পাহাড়ের উঁচু উঁচু গাছগুলোও যেন গায়ে বরফ মেখে কাঁপছে। সমতল থেকে প্রায় ৬,০০০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত শিলং শহর এবং তার আশেপাশে দেখার জন্য অনেক সুন্দর জায়গা আছে। বিশেষত যারা পুরো পরিবার নিয়ে স্বল্প খরচে দেশের বাইরে ঘুরতে যান তারা শিলংকে বেছে নিতে পারেন অনায়াসে। ভ্রমণপিপাসুদের জন্য শিলং হতে পারে আরও সহজ ভ্রমণের স্থান। পৃথিবীর ২য় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় চেরাপুঞ্জিতে, যা মেঘালয় রাজ্যের অন্তর্গত। যারা মেঘ, পাহাড়-পর্বত এবং ঝরণা ভালোবাসেন তাদের জন্য আদর্শ গন্তব্য হতে পারে মেঘালয় কিংবা তার রাজধানী শিলং। মূলত শিলং এমন একটি জায়গা যেখানে বছরের যেকোনও সময়ই ভ্রমণ করা যায় স্বাচ্ছন্দে। তবে বর্ষার সময়টায় রেইন কোট, ছাতা এসবের একটু বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হয়। কারণ চেরাপুঞ্চিতে অনেক বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়াও ছোট-বাচ্চা থাকলে ডিসেম্বর-জানুয়ারি সময়টাতে না যাওয়াই ভালো। কারণ তখন তাপমাত্রা ৩-১০ ডিগ্রী থাকে, তবে বরফ পড়ে না। শিলংয়ের আদর্শ ভ্রমণ কেন্দ্র বলেই এখানে বেশ কিছু ভালো রিসোর্ট পাবেন। মেঘালয়ের পুলিশ বাজারের আশেপাশে অনেকগুলো হোটেল আছে। ভাড়া ৫০০-২০০০ টাকা। তবে একটু যাচাইবাছাই করে উঠতে পারেন। খাবারটাও বেশ ভালো। মোটামুটি খরচে আপনি ভাত-মাছ খেতে পারেন। জনপ্রতি ১০০-১৫০ টাকা খরচ হবে। শিলং পৌঁছুনোর পর যদি দুপুর গড়িয়ে যায় তবে সেদিন আর কোথাও না বেরুনোই ভালো। তবে শেষ বিকেলে উমিয়াম লেকটা ঘুরে আসতে পারেন। অথবা ডন বসকো মিউজিয়াম, ওয়ার্ড লেক দেখে সময় কাটান। সন্ধ্যাটায় টুকটাক শপিং করতে পারেন। চেরাপুঞ্জি বা সোহরা হচ্ছে শিলংয়ের মূল আকর্ষণ। যদি সংখ্যায় বেশি লোক থাকেন নিজেরা একটা গাড়ি ভাড়া করে চলে যান। না হলে মেঘালয়ের ট্যুরিজমের বাসে করে যান। অনেকগুলা স্পটই একদিনে কভার করা যাবে। যেমন, সেভেন সিস্টারস ফলস, মাউসামি কেইভ, নুকায়কালী ফলস, মাউন্টেইন ভিউ ইত্যাদি। বাস কিংবা ট্যাক্সির ভাড়াটাও খুব বেশি না। শিলং ভ্রমণের সময় আপনি এলিফ্যান্ট ফলস এব শিলং পিক ঘুরতে পারেন। দুটোই শহরের কাছাকাছি। হাতে যদি পর্যাপ্ত সময় থাকে তবে আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে একবার ঘুরে আসতে পারেন। শিলং থেকে বাস কিংবা ট্যাক্সিতে মাত্র ৩ ঘণ্টার পথ। এই গুয়াহাটি থেকে ট্রেনে ভারতের যেকোনও প্রদেশে যাওয়া যায়। তবে শিলংয়ে টাকা কিংবা ডলার ভাঙানো কিন্তু খুব সমস্যা। অতএব আগেভাবেই এ ব্যাপারটির সমাধান করে রাখবেন।