ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে এ রোগের হাত ধরে আরো হাজারটা রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবেটিসে ভুগলে প্রভাব পড়তে পারে চোখের ওপরেও। বৃদ্ধ বয়সে অনেকেই চোখে ঝপসা দেখেন। অনেকের মনে হতেই পারে, হয়তো চোখে ছানি পড়েছে। তবে সাবধান, ডায়াবেটিকদের রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকখানি। আর তা ডেকে আনে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির মতো অসুখ। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীর চোখের রেটিনার অংশে রক্তবাহী সরু ধমনীগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে এক প্রকার ফ্লুইডের ক্ষরণ শুরু হয়। এর কারণেই দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। এর পরবর্তী পর্যায়ে ধমনীতে রক্ত চলাচলের সমস্যা আরো বাড়ে। রেটিনার বিভিন্ন অংশে ঠিকমতো অক্সিজেন পৌঁছতে না পেরে চোখে রক্তক্ষরণ শুরু হয়, ডাক্তারি পরিভাষায় এই সমস্যাকে বলা হয় ভিট্রিয়াস হেমারেজ। এই হেমারেজের কারণে আসতে পারে অন্ধত্ব।
১) ডায়াবেটিস রোগীর চোখের দৃষ্টি ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে যাওয়া।
২) কিছু পড়তে বা দূরের জিনিস দেখতে সমস্যা হওয়া।
৩) রং বুঝতে সমস্যা হওয়া।
৪) হঠাৎ চারদিক অন্ধকার দেখা, নির্দিষ্ট কোনো অংশ দেখতে না পাওয়া এবং আচমকা আলোর ঝলকানি দেখা।
৫) চোখের সামনে পোকার মতো কিছু ঘুরে বেড়াচ্ছে মনে হওয়া।
কী করবেন?
ডায়াবেটিকরা চোখে এই ধরনের সমস্যা অনুভব করলেই সাথে সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা অ্যাঞ্জিয়োগ্রাফি, চোখের স্ক্যানের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করেন।
লেজার থেরাপি, চোখের ইঞ্জেকশন বা স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিয়ে দৃষ্টিশক্তি আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন। যে সব ডায়াবেটিস রোগী রেনাল প্রোফাইল (ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা), রক্তচাপ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখেন, তাদের চোখের সমস্যা অনেক কম হয়। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ আর শরীরচর্চা করলে এগুলো ঠিক রাখা সম্ভব।
ডায়াবেটিক রোগীরা ছয় মাস অন্তর অন্তর চোখ পরীক্ষা করাতেও ভুলবেন না। সামান্য গাফিলতি বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
__________________________________________________________
__________________________________________________________
_______