প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সকাল থেকে ঘুমানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত জীবন যুদ্ধ করতে হয়। ফলশ্রুতিতে শরীর ও মনে বাসা বাঁধে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক এবং মানসিক চাপ বা স্ট্রেস।
স্ট্রেস সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড.নাসরিন ওয়াদুদ বলেন, অতিরিক্ত শারীরিক অথবা মানসিক পরিশ্রমে আমরা যে মানসিক অবস্থা অনুভব করি তাই হচ্ছে মানসিক চাপ বা স্ট্রেস। এই চাপ আসতে পারে বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উভয় দিক থেকেই।
আসলে মানসিক চাপ একটি স্বাভাবিক ব্যাপার যা সব বয়সের মানুষের মধ্যেই থাকে।
আবার মানসিক চাপ সব সময় খারাপও না। বরং অল্প কিছু মানসিক চাপ থাকা ভালো। মানসিক চাপের জন্যই আমরা কর্মক্ষেত্রে, পড়াশোনায় কিংবা খেলাধুলায় ভালো করার চেষ্টা করে থাকি।
তবে স্বাভাবিক মানসিক অবস্থা যেমন আমাদের সাফল্য এনে দিতে পারে তেমনি অতিরিক্ত মানসিক চাপ আমাদের মাঝে হতাশা এবং ডিপ্রেশনের জন্ম দিতে পারে।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করে অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেম। অতিরিক্ত মানসিক চাপ অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেমের স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটায়।
নিজেকে অপরাধী ভাবা, ক্লান্তি বোধ করা, মাথা ব্যথা, ঘুমের সমস্যা, কারণ ছাড়া হাসি বা কান্না অতিরিক্ত মানসিক চাপের উপসর্গ।
নিজের দোষ অন্যের ওপর চাপানোর চেষ্টা করা। যেকোনো বিষয়ের খারাপ দিক খুঁজে বের করা। কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, মোটা হওয়া বা শুকিয়ে যাওয়া। উচ্চ রক্তচাপ, ঘন ঘন নিশ্বাস নেওয়া। হজম শক্তি কমে যাওয়া প্রভৃতি।
মানসিক চাপ মোকাবেলায় আমাদের নিয়মিতভাবে সুষম খাবার খাওয়ার পাশাপাশি চা ও কফি কম খেতে হবে। প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুমেরও।
এছাড়া কাজের চাপ নিতে হবে আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী। মাঝে মাঝে কাজে বিরতি দিয়ে মন খুলে আনন্দ করতে হবে বা বাইরে কোথাও থেকে ঘুরে আসতে হবে।
সমস্যাগুলোর ব্যাপারে বিশ্বস্ত কারো সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে হবে। পাশাপাশি যেকোনো কাজকে স্বাভাবিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেওয়া ও ভয় না পাওয়ার মাধ্যমে মানসিক চাপ নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
__________________________________________________________
__________________________________________________________
_______