চোখের আলোয়
কলমে – নীলিমা চ্যাটার্জী
বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ
……………………..
শরতের সোনা রোদে হঠাৎ ফুরি পাগলীটা ঝড়ের গতিতে এল। অবাক হয়ে তাকালাম ফুরির দিকে।তার কোলে সে-ই ছোট্ট ফুরি। মাথায় সোনালী চুল।পাতলা গুলাপি ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি। চুলের রঙে চোখটাও যেন মিলেমিশে একাকার….।
ফুরির চোখে মুখে এখনো গ্রাম্য সাদা মাটা সারল্য। শহরের আদব কায়দা তাকে স্পর্শ করে নি।
ঐ ছোট্ট ফুরিকে দেখছি । বেবী বেডে শুয়ে হাত পা নেড়ে মুখে একটা অজানা আওয়াজে উপরে ঝুমঝুমির দিকে তাকিয়ে সে তার মত করে তার নিজের ভাষায় তার জগতে। তাদের জগতে তারা। বড়দের জগতে শিশুর child growth development তিন মাসের। অফিসে তখনো ভীড় জমে নি…..। আমার চোখ ছোট্ট ফুরির সাথে।
শরতের সোনা রোদে হঠাৎ ঝির ঝির বৃষ্টি।ফুরি দুহাত ছড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ঝির ঝির বৃষ্টিতে শরৎকে মাখছে সারা অঙ্গে।আনন্দ সারা শরীরে মন জুড়ে।শরৎ প্রকৃতি কন্যা -মেঘবালিকা ।
ফুরি অন্ধচোখে আলোর জগতে।ফুরিকে দেখলেই বোঝা যায়।বাম চোখটা গোল বলের মত বাইরে বেরিয়ে আসছে যেন। দৃষ্টি হারানো ঐ চোখ। আকাশ -বাতাস, গাছ -গাছালি ই ফুরির সঙ্গি। মানসপটে আঁকা রহস্যময় এই ফুরি…..। গরুর সাথে লড়াইতে ফুরি দৃষ্টি হীন।
ফুরি মেশে অজানা আনন্দে। প্রকৃতির সাথে অনুভবে। প্রকৃতি বাঁচে ফুরির স্পর্শের অনুভূতিতে।
ফুরি চ্যাম্পিয়ন। আমি ‘চোখের আলোয়ে ‘ ফুরির চোখ ফিরিয়ে দিতে।ভাবতে থাকি।টেবিলে হাত রাখি।আশা থেকে যায় ফুরি দুচোখ ভরে মেঘবালিকা হয়ে থাকুক প্রকৃতির কন্যা রূপে।
ফুরির মেয়ে একসময় কেঁদে উঠে। আমি কোলে নিয়ে ছোট্ট ফুরিকে মা ফুরির কোলে দিলাম। বুকে একরাশ পাগলী ফুরির গন্ধ নিয়ে অফিস চেয়ারে বসলাম।শরতের বুকে ফুরি…আমার খাতার পাতায় মনের পাতায় “চোখের আলোয়” ফুরি………।।
সত্য ঘটনা অবলম্বনে……