অপূর্ণ ভালোবাসার গল্প
কলমে – প্রসূন বিশ্বাস
৪সি কাশী নাথ দত্ত রোড, কলিকাতা ৭০০০৩৬
ভাবনায় ধরা যাক ছেলেটা আর মেয়েটার ঘরটা ছিল এমন…টালির চাল ফুলে ভরা, দু-চার গুচ্ছ চাল ছাপিয়ে এসে পড়ছে নীচে। মেয়েটা প্রায়ই মাটিতে পড়ে থাকা ফুল গোঁজে খোঁপায় । ছেলেটা তার ফুলের খোঁপা খুলবে টান মেরে তা বেশ জানে সে… তাও মাথায় ফুল গুঁজতে ভারি ভাল লাগে তার।কেমন তকতকে নিকানো উঠোন, তারই মধ্যে মাটির উনুনে টগবগ করে ফোটে ভাত।কী যে বাস ছড়ায়… গরম ভাতের গন্ধ, গাছের দুটো কাঁচা লঙ্কা আর নুন। কতদিন এই দিয়েই খেয়ে ওঠে মেয়েটা।ছেলেটা ফেরে অনেক রাতে নিঝুম হয়ে যায় চারিদিক তখন। শেষ ট্রেনের আওয়াজ মিলিয়ে যায় ধীরে। শেয়ালগুলি ডাকতে থাকে জোরে। কোনও কোনও দিন মাটির হাঁড়িতে কী বেশ এক মিষ্টি আনে শহর থেকে । কী তার স্বাদ !!..আর হাতে নিয়ে আসে রজনীগন্ধার মালা। ফুলটার গন্ধে কেমন নেশা হয় মেয়েটার…সেদিন ভালবাসাবাসি একটু বেশিই হয় তাদের। রজনীগন্ধা পিষে যায় বিছানায় l সকালের রোদ এসে পড়ে জানালায় । গন্ধরাজ লেবুর পাতা ছিঁড়ে ভাতে দেয় মেয়েটা। আজ ছেলেটা বাড়িতে… এই একটা দিনের জন্য সারা সপ্তাহ উন্মুখ হয়ে থাকে মেয়েটা…শুধু একটাই জিনিস খচখচ করে মেয়েটার মনে…ছেলেটা কী কাজ করে কোথায় যায় কিছুই জানে সে…
তারপর…একদিন মেয়েটা বসে থাকে…বসেই থাকে ছেলেটা আর ফেরে না…শেষ ট্রেনের শব্দ মিলিয়ে যায় ক্রমে…শেয়ালের ডাক তীব্র হতে থাকে আরও তীব্র হতে থাকে…মেয়েটা বসে থাকে বসেই থাকে… দিনের পর দিন কেটে যায়…ছেলেটা আর ফেরে না…
কে জানে কী হল তারপর মেয়েটার… ছেলেটাকে খুঁজতে গেল কি শহরের দিকে ? বড় সুন্দরী মেয়ে, শহর আরও বড়। কে জানে কী হল তার…যাই হোক এসব অন্য গল্প…
তবে বাড়িটা এমন ছিল তাদের, ফুলে ঘেরা পাতায় ছাওয়া… ভালবাসার ঘর…