।। পরিচয় ।।

 

রচনা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কবিতা পাঠে

সুমিতা পয়ড়্যা

কল্যাণী, নদীয়া।

 

একদিন তরীখানা থেমেছিল এই ঘাটে লেগে

বসন্তের নূতন হাওয়ার বেগে ।

তোমরা শুধায়েছিলে মোরে ডাকি ,

” পরিচয় কোনো আছে নাকি,

যাবে কোনখানে ? “

আমি শুধু বলেছি, ” কে জানে !”

নদীতে লাগিল দোলা ,বাঁধনে পড়িল টান—-

একা বসে গাহিলাম যৌবনের বেদনার গান।

সেই গান শুনি

কুসুমিত তরুতলে তরুণ তরুণী

তুলিল অশোক—

মোর হাতে দিয়ে তারা কহিল ,” এ আমাদেরই লোক”।

আর কিছু নয়,

সে মোর প্রথম পরিচয় ।।

তার পরে জোয়ারের বেলা সাঙ্গ হল.

সাঙ্গ হল তরঙ্গের খেলা ;

কোকিলের ক্লান্ত গানে বিস্মৃত দিনের কথা অকস্মাৎ যেন মনে আনে ;

কনকচাঁপার দল পড়ে ঝুরে;

ভেসে যায় দূরে,

ফাল্গুনের উৎসবরাতির নিমন্ত্রণলিখনপাঁতির

ছিন্ন অংশ তারা অর্থহারা ।

ভাঁটার গভীর টানে

তরীখানা ভেসে যায় সমুদ্রের পানে ।

নুতন কালের নব যাত্রী ছেলেমেয়ে

শুধাইছে দূর হতে চেয়ে,

‘ সন্ধ্যার তারার দিকে

বহিয়া চলেছে তরণী কে ?”

সেতারেতে বাঁধিলাম তার,

গাহিলাম আরবার,

‘ মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক,

আমি তোমাদেরই লোক,

আর কিছু নয়—–

এই হোক শেষ পরিচয় ।।

 

………………………………………………………………………………………………….

  •  

  • __________________________________________________________

  •  

  •  

  •  

  • __________________________________________________________

  • _______

  •  

  •  

  •  

  •  

  •  

  •  

  •  

  •   

Loading