নিজস্ব প্রতিনিধি – ভারত দরিদ্র এবং চরম অসাম্যের দেশ। ‘আচ্ছে দিন’-এর স্বপ্ন দেখানো মোদি সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে এমনটাই দাবি করা হয়েছে ‘ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাব’-এর প্রকাশ করা বিশ্ব অসাম্য রিপোর্টে।
সম্প্রতি দারিদ্র, অর্থনৈতিক অসাম্য ও লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ফ্রান্সের প্যারিস স্কুল অফ ইকোনোমিক্স-এ অবস্থিত ‘ওয়র্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাব’। এই রিপোর্ট তৈরিতে অন্যান্য অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন ফ্রান্সের অর্থনীতিবিদ টমাস পিকেটি ও সংস্থাটির সহ-পরিচালক লুকাস চান্সেল।
রিপোর্টের মুখবন্ধে নোবেলজয়ী দুই অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও এস্থার ডাফলো লিখেছেন, বিশ্বের যে সব দেশে অসাম্য চরমে, ভারত এখন তার মধ্যে পড়ছে। ‘কনসেনট্রেশন অফ ওয়েল্থ’ বা কয়েকজনের ভাঁড়ারে ‘সম্পদ কুক্ষিগত’ হওয়ার বিষয়টিকে তুলে ধরে বিশ্ব অসাম্য রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২১ সালের হিসেবে ভারতের এক শতাংশ মানুষের হাতে জাতীয় আয়ের পাঁচ ভাগের এক ভাগ সম্পদ রয়েছে।
ভারতে অর্থনৈতিক উদারীকরণ ও দেশের অর্থনীতির সাম্প্রতিক সংস্কারে লাভবান হয়েছে ওই এক শতাংশ ধনিক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত মানুষ। অথচ ভারতের নীচের সারির অর্ধেক মানুষের হাতে দেশের সম্পদের মাত্র ১৩ দশমিক ১ শতাংশ রয়েছে। অর্থাৎ ধনীরা অত্যন্ত ধনী। এবং দরিদ্র শ্রেণির সম্পদ আরও কমছে।
‘ওয়ার্ল্ড ইনইক্যুয়ালিটি ল্যাব’-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে লিঙ্গ বৈষম্যও চরমে। মোট আয়ে মহিলা শ্রমিক-কর্মীদের ভাগ মাত্র ১৮ শতাংশ। এই হার গোটা বিশ্বের মধ্যেই নিম্নতম। পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতেই মহিলাদের আয়ের ভাগ ১৫ শতাংশ। চীন বাদ দিয়ে এশিয়ার দেশগুলিতে এর হার ২১ শতাংশ। বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, করোনা মহামারী ও কেন্দ্রের অর্থনৈতিক সংস্কার যেমন বেসরকারিকরণের জেরে আর্থিক বৈষম্য বাড়ছে। দ্রুত নীতি পালটে পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য চরম রূপ ধারণ করবে।