জ্ঞানের সাগর
কলমে: শ্রীমতি পান্না দাস, দার্জিলিং
কবি পরিচয়:
নমস্কার 🙏! আমি শ্রীমতি পান্না দাস। সিভিল ডিপ্লোমা নিয়ে পাশ করলেও ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে সাহিত্য চর্চা। স্বদেশ সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন ঢাকা বাংলাদেশ নজরুল স্মৃতি পদক সম্মানে সম্মানিত, ক্যালকাটা ইন্টারন্যাশনাল মাইক্রো ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অণুছবি সৃজন স্মৃতি সম্মান এবং বায়োস্কোপ,ক্যালকাটা ইন্টারন্যাশনাল মাইক্রোফ্লিম ফেস্টিভ্যালে এডিটর,পশ্চিমবঙ্গ সাহিত্য মঞ্চ পত্রিকা ও সহ সম্পাদিকা,অনন্য সৃষ্টির সাহিত্য পত্রিকা ও অ্যাডমিন, পার্বত্য কাব্য পত্রিকা,অমেয় পত্রিকা,পাঞ্চজন্য পত্রিকা অন্বেষণ পত্রিকা, কুড়ি থেকে ফুল, উপন্যাস অধিকার বই প্রকাশ পেয়েছে।কলকাতার নন্দনের সদস্য, কলকাতা ডি ডি বাংলার নিউজ রিডার পাস, এবং কলকাতা ২৪ ঘন্টা খাস খবরে শিল্প ও সাহিত্যের এডিটর।
‘সফল হওয়া সহজ কাজ নয়’!
সফল ব্যক্তির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, তাঁরা তাঁদের লক্ষ্যের প্রতি অনুরাগী থাকা। স্থির সেই লক্ষ্য প্রতিটি মুহূর্তে তাঁদের হৃদয়ে ঘুরপাক খেতে থাকে। তাঁরা লক্ষ্যকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নেয়। আর সিঁড়ি বেয়ে ওঠার মতো একটু একটু করে সেগুলো অর্জন করেন। একসময় তাঁরা সফলতার সর্বোচ্চ চূড়া স্পর্শ করেন। নিজেকে প্রতিদিন ভাববেন,বেঁচে থাকার জন্য যেমন অক্সিজেন প্রয়োজন, তেমনি জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিদিন অন্তত একটি করে লক্ষ্যের কাছাকাছি যাওয়া প্রয়োজন। সহজ কথায়, আপনার প্রতিটি কাজ হোক জীবনের লক্ষ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে।
উনবিংশ শতাব্দীতে সেরা বাঙ্গালীদের মধ্যে অন্যতম ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পর্কে মাইকেল মধুসূদন দত্ত যথার্থই লিখেছিলেন-
“বিদ্যার সাগর তুমি বিখ্যাত ভারতে।
করুণার সিন্ধু তুমি, সেই জানে মনে,
দীন যে, দীনের বন্ধু!-উজ্জল জগতে
হেমাদ্রির হেম-কান্তি অম্লান কিরণে।”
পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮২০ সালে ২৬ শে সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মাতা ভগবতী দেবী।
ঈশ্বরচন্দ্রের বাল্য ও কৈশোর জীবনের দিনগুলো চরম দারিদ্র্য ও অভাব থাকা সত্ত্বেও মনোবল ছিল অসীম এবং দৃঢ়। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় ঈশ্বরচন্দ্রের বাবা অল্প পয়সার বিনিময় কলকাতার এক ব্যবসায়ীর খাতা লেখার কাজে নিযুক্ত হন। তিনি তাঁর কাজের প্রতি ন্যায়-নিষ্ঠা,সত্যতার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হতে সক্ষম হন। পরবর্তী সময়ে বাবার অসামান্য গুন,ছেলে ঈশ্বরচন্দ্রের মধ্যে পুনর্বি বিকাশ পায়।
ছাত্রবস্থায় তিনি কোনদিনই পড়াশোনায় অমনোযোগী হননি,তাই তিনি হয়ে উঠেছিলেন একজন মেধাবী ছাত্র। তিনি অত্যন্ত অল্প বয়সে পায়ে হেঁটে বাবার সাথে কলকাতায় গিয়েছিলেন। পথে মাইলস্টোনের সংখ্যার হিসাব গুনতে গুনতেই শিখে ফেললেন ইংরেজি গণনা।ঈশ্বরচন্দ্র গ্রামের পাঠশালায় প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন।পরবর্তী সময়ে বালক ঈশ্বরচন্দ্রের মেধা শক্তিতে অভিভূত হয়ে কালিকান্ত চট্টোপাধ্যায় ঈশ্বরচন্দ্রকে কলিকাতায় শিক্ষাদানের পরামর্শ দেন।মাত্র নয় বছর বয়সে ভর্তি হন কলকাতার সংস্কৃত কলেজে। ব্যাকরণে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন ঈশ্বরচন্দ্র। যথেষ্ট কৃতিত্বের সাথে পড়াশোনা করে মাসিক ৫ টাকার বৃত্তি লাভ করেন।ষষ্ঠ শ্রেণীতে আবার বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দেন এবং পারিতোষিক লাভ করেন। সংস্কৃত কলেজে বার্ষিক পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান লাভ করেন।১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু ল কমিটির’পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন,প্রশংসা পত্রে বিদ্যাসাগর’ উপাধিটি তাঁর নামের আগে ব্যবহৃত হয়।কাব্য,অলংকার,বেদান্ত,স্মৃতি,ন্যায়স্বাস্থ্য, জ্যোতিষে তিনি পাণ্ডিত্য অর্জন করেন।
১৫ বছর বয়সে দিনময়ী দেবীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
একুশ বছর বয়সেই ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের প্রধান অধ্যাপকের পদে নিযুক্ত হন। প্রথমে তিনি ৫০ টাকা বেতনে কলকাতার সংস্কৃত কলেজের সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে মাসিক ১৫০ টাকা বেতনের বিনিময় ওই কলেজের অধ্যক্ষের পদ লাভ করেন।
তিনি সমাজসংস্কারক, তাই অক্লান্ত প্রচেষ্টায় নারী শিক্ষা প্রসারের বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন, বিধবা বিবাহ আইন পাশ, বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ প্রথা রদ করেছিলেন। তিনি করুনার সাগর’ উপাধি পান।তিনি পঞ্চাশটির মতন স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বর্তমানে হিন্দু মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউট”বিদ্যাসাগর কলেজ”নামে পরিচিত।
তাঁর রচিত বর্ণপরিচয়, বোধোদয়, সীতার বনবাস, ভ্রান্তিবিলাস, বেতাল পঞ্চবিংশতি, কথামালার গল্প, শকুন্তলা। তিনি বহু বাংলা গদ্য রচনা করায় বাংলা গদ্যের জনক’ উপাধি পান।
ভারত সরকার তাঁকে ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে সি আই ই’ উপাধিতে সম্মানিত করেন।
১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে ৭১ বছর বয়সে মহান কর্মযোগী মহামানবের স্বর্গলাভ ঘটে।।
………………………………………………………………………………………………….
-
-
-
-
__________________________________________________________
-
-
-
-
-
-
-
__________________________________________________________
-
-
_______
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-