।।গল্প হলেও সত্যি ।।
মহামায়া রুদ্র
কালিকা অ্যাপার্টমেন্ট , সি আর দাস সরণি, উত্তর ঘোষপাড়া, পোস্ট অফিস: ঘোষপাড়া,থানা: নিশ্চিন্দা, বালী , জেলা: হাওড়া
জয়ন্তির বাবা ,ও জয়ন্তীর বাবা- শুনতে পাচ্ছ আমার কথা?ওঠো আর কত ঘুমাবে? ভুলে গেলে নাকি পৌষ সংক্রান্তির কথা?
পিঠেপুলি হবে তাই শিগগিরই তুমি দোকানে যাও।
দেরি না হয়,ভুলে যেওনা মায়ের রাগ। আমি তোমাকে বলছিলাম– ডেকে এনো, পাড়ার যত কচিকাঁচা ওদের আজ খাওয়াতে চাই। শিগ্রি করে আসা চাই গঙ্গা স্নানে যাব। জয়ন্তীর বাবা, ও জয়ন্তীর বাবা “এখনো ঘুম ভাঙছে না তোমার “মা “আর তোমার আদরের ছেলে
মেয়েরা কাঁদছে তো চোখ মেলে দেখো — জয়ন্তী, উত্তম, রাজু শিয়রে বসে আছে ঠায়!
জয়ন্তীর বাবা –ও জয়ন্তীর বাবা
আমি মায়া বলছি কোনো ভয় নেই তোমার।
ঘুম ভাঙাতে কলকাতা মেডিকেল হসপিটালে নিয়ে যাচ্ছি আর কেউ সঙ্গে নেই, হসপিটালে বেড নেই!
কোনো ডাক্তারের খোঁজ নেই! ঘুম না ভাঙলে বাড়ি নিয়ে যাই কি করে! জানিগো খুব কষ্ট হচ্ছে তোমার, বন্ধ চোখের কোণে জল তুমি কেদোনা ,আমরা তো আছি তোমার সাথে”’অনেক জায়গা ঘুরে এলাম কোথাও আইছিউই ফাঁকা নাই মেডিকেলে আছে ফাঁকা, দুইখানি বেড ওটা নাকি আমাদের জন্য নয়। জয়ন্তীর বাবা ও জয়ন্তীর বাবা কোন ভয় নেই মায়া আছে তো পাশে, নাওয়া নেই খাওয়া নেই ঘুমাচ্ছো অঘোরে!
চেয়ে দেখো এসেছে তোমার শালির ছেলে মেয়েরা– অপর্না,অর্চনা জয়দেব! দেখো সবার মন ভীষণ খারাপ,তোমাকে ছেড়ে কেউ যাবে না ফিরে!
নতুন বছরের প্রথম মাস বলতো আজ কত তারিখ ?২০-০১-২০১৭ তুমি এক সপ্তা ধরে ঘুমাচ্ছো। তোমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে আমরা সবাই মিলে তেল মালিশ করছি। আর বারবার ছুটে ডাক্তারকে বলছি ও ডাক্তার বাবু একটু দেখুন কেউ সারা দিচ্ছে না, আমাদের সকলের কান্নাকাটায় একজন জুনিয়ার প্রতিবন্ধী ডাক্তার দেবদূতের মত ছুটে এসে বলল এইতো হার্টবিট চলছে, এখনই আইসিউইট নিয়ে যেতে হবে।
কত ডাক্তারের দল এসে তোমাকে ঘিরে ফেললো!
তোমাকে আর দেখতে পাচ্ছি না তবুও আমরা সকলে খুশি হয়েছি, একটু পরেই ডাক্তাররা তোমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেবে। উত্তমকে হরলিক্স আনতে পাঠালাম। তোমার জন্য আমি সবাইকে বললাম আর কাঁদিস না প্রতিদিন ঠাকুরের কাছে গেছি ঠাকুর ওই ভগবান ডাক্তার কে পাঠিয়ে দিয়েছে। এদিকে তোমার ভাগ্নি জোছনা আর কয়েকজন পাড়ার লোক তোমায় দেখতে এসেছে। জয়ন্তীর বাবা ও জয়ন্তীর বাবা– আর একটু সহ্য করো সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা কাঁচের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছি তুমি বড় হা করে আছো, আমি বলছি তোর বাবার খুব খিদে পেয়েছে তাড়াতাড়ি হরলিক্স গুলে নিয়ে ডাকছি জয়ন্তীর বাবা ও জয়ন্তীর বাবা জয়ন্তীর বাবা ও জয়ন্তীর বাবা আর সারা দেওয়ার জন্য কেউ রইল না পৃথিবীর বুকে। তুমি আর সারা দিলেনা,ডাক্তার বাবুআমি জানিয়ে দিলো আর কোনো দিন তুমি সারা দেবেনা জয়ন্তীর বাবা?
তুমি একা একা ভালো থেকো, স্বপ্নে এসে দেখা দিয়ে যেও–একটু কথা বলে যেও জয়ন্তীর বাবা।
………………………………………………………………………………………………….
-
-
-
-
__________________________________________________________
-
-
-
-
-
-
-
__________________________________________________________
-
-
_______
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-
-