যজ্ঞের প্রকৃত অর্থ
প্রফেসর ডক্টর কুশল সেন
Vice Principal
Astrological Research Institute of Krishnamurthi paddhati
Agartala Tripura
Niti Aayog, Govt. of India.
সদস্য, মার্গদর্শক মন্ডল, ভারতীয় বৈদিক জ্যোতিষ সংস্থানম্, বারানসী
Prof. Dr. Koosal Sen
e-mail : kooshoeg@gmail.com
যজ্ঞের আসল অর্থ হল – মন্ত্র উচ্চারণপূর্বক ঘৃত সমর্পণ। ‘মন ত্রায়তে ইতি মন্ত্রঃ’ অর্থাৎ যা মনন করলে পরিত্রাণ পাওয়া যায় তাই ‘মন্ত্র’। যজ্ঞের অপর প্রয়োজনীয় বস্তু হল ‘সমিধ’। ‘সমিধ’ এক টুকরো কাঠ, লম্বায় এক বিঘৎ, বুড়ো আঙুলের মতো মোটা – পলাশ, অশ্বত্থ, বেল, বা যজ্ঞডুমুর গাছের কাঠ। ঘৃত বলতে সাধারণ অর্থে বোঝায় দুগ্ধ থেকে উৎপন্ন বল প্রদানকারী খাদ্য। ‘ঘৃ’ ধাতু থেকে উৎপন্ন হয়েছে ‘ঘৃত’। ‘ঘৃ’ অর্থ দীপ্ত করা বা দীপ্ত হওয়া। সাংখ্যকার ঋষি সায়ন বলেছেন ‘ধিয়ং ঘৃতাচীম্’ – অর্থ হলো উজ্জ্বল জ্যোতির্ময় বুদ্ধি।ঘৃত অর্থ দীপ্তি, যা বাইরের আলোকমাত্র নয়, অন্তরের জ্যোতি।
ঘৃত আমাদের নির্মল চেতনা যা আমরা দেবদেবীকে উদ্দেশ্য করে উৎসর্গ করি। অগ্নি তো কেবলমাত্র দেবদেবীর হাতে পৌঁছে দেয়না। অগ্নি দেবতাদের পুরোহিত, দেবদেবীরা যা আমাদের প্রদান করে তাও নিয়ে আসেন আমাদের সমীপে; তাই যজ্ঞের শেষে পুরোহিত সকলকে টীকা কপালে লাগিয়ে দেন। দেবদেবীরা তাঁদের শুভ আর্শীবাদ, কল্যানময় প্রসাদ প্রদান করেন যাতে সকল দুঃখের চির অবসান ঘটে।
‘‘প্রসাদে সর্বদুঃখানাং হানিরস্যোপিজায়তে’’।। – শ্রীমদ্ভগবত গীতা, ২য় অধ্যায়-৬৫ শ্লোক।
ঘৃত, সমিধ, অগ্নি, হৃদয়ের মধ্যে ঊষার আলো জাগিয়ে তোলে। যজ্ঞের মন্ত্রে বলা হয় – ‘অগ্নিমীলে’। ঈল্ ধাতুর কার্য হল ঈলন্ যা তিন প্রকারের বাক্য দ্বারা স্তবন, ঘৃত দ্বারা বর্ধন ও নমঃ দ্বারা পূজন।