শীতকালে শুকনা ও ঠাণ্ডা হাওয়ায় আর্দ্রতা খুব কম থাকে।
ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। বড়দের তুলনায় শিশুদের ত্বক বেশি নাজুক ও সংবেদনশীল। শিশুর ত্বক তাই খুব দ্রুত আর্দ্রতা হারিয়ে ফেলে। নবজাতক শিশুর ত্বক ৩০ শতাংশ পাতলা ও কম হাইড্রেটেড হয়।
আবার বড়দের তুলনায় শিশুদের ত্বকের প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজারও কম থাকে। এ জন্য শিশুর ত্বক ভালো রাখতে শীতের সময় বিশেষভাবে যত্ন নিতে হবে।
শীতে অনেক মা শিশুকে স্নান করাতে চান না। এটা ঠিক নয়।
স্নান করালে ত্বক আর্দ্র ও নরম হয়। শরীরের ধুলাবালি ও ময়লা দূর হয়। স্নানের সময় হালকা, নন-গ্রেসি শ্যাম্পু দিয়ে শিশুর মাথার ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। দিনে একবার কিংবা এক দিন অন্তর একবার শিশুকে স্নান করাতে পারেন। শিশুদের স্নানে মৃদু মাত্রার সাবান ব্যবহার করা উচিত।
যেদিন স্নান করাবেন না, সেদিন হালকা গরম পানিতে নরম কাপড় ভিজিয়ে সারা শরীর মুছে দিতে পারেন। অনেক মা ঠাণ্ডার ভয়ে শিশুকে গরম পানিতে স্নান করান। তবে বেশিক্ষণ গরম পানিতে স্নান করাবেন না।
এরপর ময়েশ্চারাইজার শিশুর ত্বকে মালিশ করে দিন। ত্বক ভেজা থাকতেই ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগানো বেশি উপকারী। শিশুর ত্বকে বেবি লোশন লাগাতে পারেন। এতে শিশুর ত্বক সারা দিনের জন্য নরম, কোমল ও আর্দ্র থাকবে। শীতকালে শিশুদের গাল শুকিয়ে ফেটে যায়। এ জন্য গালে ক্রিম লাগিয়ে তা আলতোভাবে মালিশ করে দিন। শিশুর ঠোঁট ফাটা প্রতিরোধে ঠোঁটে ভ্যাসলিন বা লিপবাম ব্যবহার করতে পারেন। শিশুর ঠোঁট শুকিয়ে গেলে লিপবাম লাগিয়ে দিন। হাত, পা ফাটা দূর করতে হাত ও পায়ে লোশন অথবা অলিভ অয়েল ব্যবহার করুন। শিশুকে নিয়ে বাইরে যাওয়ার আগে ও পরে ক্রিম ও লোশন লাগিয়ে নিন। শিশুকে এ সময় অবশ্যই আরামদায়ক শীতের পোশাক পরিয়ে রাখতে হবে।
শিশুদের ত্বকে ভালো ব্র্যান্ডের প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করুন। নকল প্রসাধনী শিশুর সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে। এ বিষয়ে বিশেষভাবে সাবধানতা মেনে চলুন। শীতে শিশুর জন্য ডায়াপার আর বেবি ওয়াইপস ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। খেয়াল রাখুন ডায়াপার যেন নরম আর হাইড্রেটিং হয়।
শীতকালে শিশুর ত্বকে অনেকে তেল ব্যবহার করেন। এতে ত্বকে ময়লা জমে ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মাথায় তেল ব্যবহার করার ফলে মাথার ত্বক ভেজা থাকায় ঠাণ্ডা লাগতে পারে।
সুস্থ ত্বকের জন্য নিয়মিত শিশুেক পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো জরুরি। শীতে শিশুদের খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এ জন্য ঘন ঘন পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান। এতে ত্বক ভালো থাকবে। ত্বকের মসৃণতা ও উজ্জ্বলতা বাড়াবে। ডিমের কুসুম, সবজির স্যুপ ও ফলের রস খাওয়াতে পারেন। দাঁতে চিবিয়ে খেতে হয় এমন ফল ও সবজি শিশুদের ত্বকের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনে। এমন ফল ও সবজি খেতে শিশুকে উৎসাহিত করুন। সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ালেও উপকার মিলবে।
__________________________________________________________
__________________________________________________________
__________________________________________________________