মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন বি১২ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এ ভিটামিনটি আমাদের শরীরে উৎপন্ন হয় না। বিভিন্ন খাবারের মাধ্যমে এটি গ্রহণ করতে পারি। এটি সাধারণত পেতে পারি ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার থেকেই।
ভিটামিন বি১২ মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের কাজে সহায়তা করা, ডিএনএ তৈরি ও বজায় রাখা, লোহিত রক্তকণিকা তৈরি ও বজায় রাখা এবং বিপাকীয় প্রক্রিয়া ও শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে এটি।
তাই আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন বি১২’র আবশ্যক। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, শরীরে ভিটামিন বি১২-এর অভাব রয়েছে কিনা। ছয়টি লক্ষণে বোঝা যায় ভিটামিন বি১২-এর অভাব আছে কিনা। জেনে নিই সেই সম্পর্কে—
১. কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা
ভিটামিন বি১২-এর অভাবে কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভিটামিন বি১২ আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় নতুন রাসায়নিক তৈরি করতে হোমোসিস্টাইন নামের অ্যামিনো অ্যাসিডকে ভেঙে দেয়। আর যখন আপনার শরীরে ভিটামিন বি১২-এর অভাব হয়, তখন আপনার হোমোসিস্টাইনের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। শরীরে হোমোসিস্টাইনের মাত্রা বেড়ে গেলে তা হার্টঅ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
২. রক্তশূন্যতা
অ্যানিমিয়া হচ্ছে এমন একটি অবস্থা, যেখানে আমাদের শরীরের টিস্যুতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন বহন করার জন্য যথেষ্ট স্বাস্থ্যকর লাল রক্তকণিকার অভাব দেখা দেয়। এটিকে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতিও বলা হয়। ভিটামিন বি১২-এর অভাবে এটি হতে পারে। এমনটি হলে এর ফলে আপনার ক্লান্ত ও দুর্বল বোধ হতে পারে। এ ছাড়া অনিদ্রা, অলসতা, মেজাজ খারাপের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩. ক্লান্তি ভাব
ভিটামিন বি-১২ এর প্রধান কাজগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন। আর লোহিত রক্তকণিকাগুলো কাজ করার সময় আপনার পেশিসহ সারা শরীরে অক্সিজেন বহন করে। ভিটামিন বি১২-এর অভাবে অক্সিজেন পরিবহণে কম লোহিত রক্তকণিকা থাকায় এটি আপনাকে দুর্বল বা ক্লান্ত বোধ করাতে পারে।
৪. ডিমেনশিয়া
পর্যাপ্ত ভিটামিন বি১২-এর অভাবে আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি থাকতে পারে। পর্যাপ্ত ভিটামিন বি১২ শরীরে না থাকলে ডিমেনশিয়ার মতো উপসর্গ থাকতে পারে। এর ফলে হ্যালুসিনেশন, বিরক্তি, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মেজাজ পরিবর্তনের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৫. জিহ্বায় ঘা
বিভামিন বি১২-এর অভাবে জিহ্বায় ঘা হতে পারে। এমনটি হলে জিহ্বা মসৃণ হয়ে যেতে পারে এবং স্বাদ হারাতে পারেন। আর এমনটি হলে জিহ্বার রঙ লাল রঙের দেখায়।
৬. নিঃশ্বাসের দুর্বলতা
ভিটামিন বি ১২-এর অভাব হলে তা আমাদের পেশিগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহ করার জন্য লোহিত রক্তকণিকার ক্ষমতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। আর এটির কারণে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া মাথা ঘোরানোও হতে পারে।