শীতের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এরইমধ্যে বাজারে এসে গেছে ধনেপাতা। তরকারির স্বাদ বাড়াতে অনেকেই ধনেপাতা ব্যবহার করেন। আবার যেকোনো ভর্তায়ও জায়গা করে নেয় এই সুগন্ধি পাতা। কিন্তু জানেন কি, খাবারে স্বাদ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ধনেপাতার রয়েছে বেশ কিছু ঔষধি গুণ। ফুলকপি, বাঁধাকপি, কাঁচা তেঁতুল, শিমের সঙ্গে বাজারে উপচে পড়ছে টাটকা ধনেপাতায়।
ধনেপাতা রক্ত শোধন করে। আমাদের শরীরে রোজ তিলে তিলে জমা হতে থাকে বেশ কিছু ধাতু এবং বিষাক্ত দূষণকারী পদার্থ। এর ফলে শরীরে বহু দূরারোগ্য অসুখ যেমন ক্যান্সার, হৃদরোগ, মস্তিষ্কের বিভ্রাট, মানসিক রোগ, কিডনি ও ফুসফুসের অসুখ এবং হাড়ের দুর্বলতা তৈরি হতে পারে। ধনেপাতা রক্তপ্রবাহ থেকে এই সমস্ত ক্ষতিকর উপাদান নিষ্কাষণ করে শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখে।
ধনেপাতায় আছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, লোহা ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো বেশ কয়েকটি উপকারী খনিজ। এছাড়া ভিটামিন এ এবং ভিটামিন কে- এর সাপ্লাই দেয় এই ধনেপাতা। এই উদ্ভিদ অ্যান্টিসেপ্টিক, অ্যান্টিফাংগাল এবং যে কোনও চুলকানি ও চামড়ার জ্বলনে অব্যর্থ ওষুধ। দিল্লির এইমস-এর গবেষণাগারে রিউম্যাটিক আর্থারাইটিস রোগে আক্রান্ত ইঁদুরের পায়ে ধনেপাতার রস প্রবেশ করালে তার শরীরের জ্বলন ও ফোলা ভাব দূর হতে দেখা গেছে।
সাবধানতা-
ধনেপাতা উপকারী তবে, অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। অতিরিক্ত ধনেপাতা লিভারের কার্যক্ষমতাকে বিপরীতভাবে প্রভাবিত করে থাকে। এতে থাকা এক ধরনের উদ্ভিজ তেল শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আক্রান্ত করে । অতিরিক্ত ধনেপাতা রক্তচাপ হ্রাস করে । বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এই ধনেপাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
স্বাভাবিকভাবে ধনেপাতা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল বিষয়ক সমস্যা দূর করে থাকে। কিন্তু বেশি পরিমাণে ধনেপাতা সেবন পাকস্থলীতে হজমক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করে থাকে। ধনেপাতা অল্প খেলে পেটের সমস্যা দূর হয় কিন্তু এটি বেশি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ধনেপাতা খাওয়া ভ্রূণের বা বাচ্চার শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক।