নিজস্ব প্রতিনিধি – মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার যখন কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না, তখন ফেসবুক-টুইটারে ‘ভুল তথ্যের’ ছড়াছড়িতে চটেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টে জো বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করোনাভাইরাস নিয়ে ভুলভাল তথ্য মানুষ খুন করছে। যারা এখনও ভ্যাকসিন নেয়নি কেবল তারাই এখন আক্রান্ত হচ্ছেন।’ মহামারি করোনাভাইরাস ও ভ্যাকসিন কার্যক্রম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অপপ্রচার চলছে ভ্যাকসিন কার্যক্রম নিয়ে। ভ্যাকসিন কার্যক্রমের বিরোধিতা করে সেই দলটি প্রায় ৫৯০ লাখ ফলোয়ার পেয়ে গেছে। এই দলটি বলছে, করোনা মোকাবেলায় ভ্যাকসিন কার্যক্রমে তাদের বিশ্বাস নেই। যুক্তরাষ্ট্রের জনস্বাস্থ্য বিভাগের সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি)  প্রতিবেদন বলছে, দেশটির প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৬৭ দশমিক ৯ শতাংশ  টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন আর ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ ভ্যাকসিনের দুইটি ডোজ সম্পন্ন করেছেন। সিডিসি বলছে, ‘প্রাপ্তবয়স্কদের অনেকে ভ্যাকসিন নিতে নারাজ। তারা বলছেন, তারা এটাতেই মোটেই ভরসা করতে পারছেন না।’ সিডিসির পরিচালক রোসেল ওয়ালেনস্কি বলেন, তারা ভ্যাকসি না নেওয়ায় মহামারির ঝুঁকি রয়েই যাচ্ছে। শুক্রবার হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ভ্যাকসিন নিয়ে ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

এমন পরিস্থিতিতে ভুল  ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের মোকাবেলা করতে হোয়াইট হাউজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এটিকে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ‘আগ্রাসী পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখছে। তবে ঢালাও অভিযোগ মানতে নারাজ তারা। ফেসবুকের মুখপাত্র কেভিন ম্যাকঅ্যালিস্টার বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা ১৮০ লাখ ভুল তথ্য মুছে ফেলেছি এবং নিয়ম ভঙ্গ করায় অনেক অ্যাকাউন্ট সরিয়ে ফেলেছি।  তবে কিছু ভিত্তিহীন অভিযোগে আমরা বিভ্রান্ত নই।’

গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই ও টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যাক ডোরসি বলেছেন, বিভ্রান্তিকর তথ্য সরিয়ে ফেলতে কাজ করছেন তারা। গত বছরের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের ল্যাপটপ থেকে ‘রাজনৈতিকভাবে বেশ বিব্রতকর’ কিছু  ইমেইল ফাঁস হয়ে যায়। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়া নজরদারি চালাতে শুরু করে হোয়াইট হাউজ।

Loading