নিজস্ব প্রতিনিধি – বিভিন্ন রক্তজনিত রোগ বা শারীরিক দুর্ঘটনার জন্য শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা দিলে আমাদের জরুরি ভিত্তিতে রক্তদানের প্রয়োজন পড়ে। রক্তদানের মাধ্যমে জীবন বাঁচানো একটি মহৎ কাজ। আমাদের দেশে বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশ নিয়ে থাকেন। নিরাপদ রক্তদানের আগে কিছু বিষয়ের দিকে লক্ষ রাখা দরকার।

রক্তদানে উপযুক্ত ব্যক্তি:

সাধারণত ১৬-৬০ বছর বয়স্ক মানুষ, ওজন ৫০ কেজি বা তার বেশি, শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক—রক্তদানের ক্ষেত্রে এগুলো সাধারণ যোগ্যতা। তবে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পুরুষের ক্ষেত্রে ১৩ গ্রাম/ডেসি লিটার ও নারীদের ক্ষেত্রে ১২.৫ গ্রাম/ডেসি লিটারের বেশি থাকলেই শুধু তাঁরা রক্তদানের উপযুক্ত।

রক্তদানের উপকারিতা:

 *নিয়মিত রক্তদানে শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

 *রক্তদানের ফলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে, এতে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

*নিয়মিত রক্তদানের ফলে শরীরের অস্থিমজ্জা থেকে রক্তকণিকা উৎপাদন হওয়ার হার বেড়ে যায়।

*ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়।

যেসব বিষয় খেয়াল রাখা দরকার

*রক্তদানের আগে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে।

 *রক্তদানের আগে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। খালি পেটে কখনোই রক্ত দেওয়া উচিত নয়। রক্তদানের আগে তেলসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকা দরকার।

*রক্তদানের ফলে আমাদের শরীরে যে ফ্লুইড ভলিউম কমে যায়, তার জন্য রক্তদানের আগে ও পরে পানি বা ফলের রস যথেষ্ট পরিমাণে পান করতে হবে।

*কোনো ব্যক্তি যদি রক্ত পাতলা রাখার ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে রক্ত দেওয়ার দুই দিন আগে থেকে ওষুধ সেবন বন্ধ রাখতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

* নিরাপদ রক্তদানের জন্য রক্তদানের আগে দাতার রক্তের স্ক্রিনিং টেস্ট অবশ্যই করে নিতে হবে।

* রক্তদানের পর আধঘণ্টা বসে বা শুয়ে বিশ্রাম নিতে হবে। সেদিন ভারী কাজ, ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

 *রক্তদানের ফলে শরীরে সাময়িক আয়রনের মাত্রা কমে যায়, সে জন্য রক্তদানের পর আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। প্রয়োজনে সাপ্লিমেন্ট সেবন করতে হবে।

রক্তদানে অনুপযুক্ত ব্যক্তি:

*জ্বর, সংক্রামক ব্যাধি, কোনো দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত, হার্ট বা কিডনিজনিত রোগ, ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তি কখনোই রক্তদাতা হতে পারবেন না।

* নারীদের ক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এবং ঋতুস্রাব চলাকালীন রক্ত দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

 *শরীরে কোনো অস্ত্রোপচারের ছয় মাসের মধ্যে রক্ত দেওয়া যাবে না।

Loading