মৃগী রোগের কথা শুনে অনেকেই ভয়ে কুঁকড়ে যান। আমাদের কাছে এমন অনেকেই আসেন যারা প্রিয়জন মৃগী রোগে আক্রান্ত হয়েছেন শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেক অভিভাবক শিশুদের লেখাপড়া বন্ধ করে দেন। তারা ভাবেন, মৃগী রোগ হলে কেউ স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন না। এটা মোটেও ঠিক নয়। অনেকে অভিভাবককেই বলতে শুনেছি, লেখাপড়া করে কী হবে? আমার সন্তান তো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে না।

এ প্রসঙ্গে কিছু উদাহরণ তুলে ধরছি। আলেকজান্ডার দি গ্রেটের নাম শোনেননি এমন মানুষ কমই আছেন। তার মতো দিগ্বিজয়ী যোদ্ধা কিন্তু কমই জন্মেছে এ জগতে। তিনি কিন্তু মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন। অন্যদিকে বিখ্যাত দার্শনিক এরিস্টটলও মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন। অনেকের হয়তো জানা নেই, বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলও মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন। অথচ তিনি ডিনামাইটের আবিষ্কার করেছেন। তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩৫০টি জিনিসের স্বত্ব এবং ২০টি দেশে অনেক কারখানা এবং ল্যাবরেটরির মালিক ছিলেন। স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে না পারলে কি এত বড় বিজ্ঞানী হওয়া সম্ভব? এটা শুনেও অনেকে আশ্চর্য হবেন, আমেরিকার ২৬তম প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্টও মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এটা সবারই জানা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কতটা ক্ষমতাধর।

শুধু তারাই নন, আরও যে কত বিখ্যাত ব্যক্তি মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন তার হিসাব নেই। একবার ভাবুন তো, তারা যদি মৃগী রোগ নিয়ে বিশ্বজয় করতে পারেন, বিশ্ববরেণ্য হতে পারেন তাহলে আপনার শিশু বা প্রিয়জন কেন পারবে না?

মৃগী রোগে আক্রান্ত শিশুরা স্বাভাবিক স্কুলেই পড়তে। অন্য বাচ্চাদের মতোই করতে পারে খেলাধুলা। তবে সে ক্ষেত্রে কিছু ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে। যেমন মৃগী রোগ নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত  জলতে সাঁতার কাটা, নদী-পুকুরে নামা, আগুনের কাছে যাওয়া, ধারালো বস্তু নিয়ে কাজ করা, গাড়ি ড্রাইভিং করা এবং একাকী রাস্তা পারাপার হওয়া। তবে রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে স্বাভাবিক সবকিছুই করা সম্ভব।

শিশুর মৃগী রোগ থাকলে স্কুলের শিক্ষকদের আগে থেকে জানিয়ে রাখুন। সাবধানতার জন্য খিঁচুনি শুরু হলে কী করতে হবে, তাও তাদের বলে রাখুন।

মৃগী রোগ হলে স্বাভাবিক জীবনযাপনে কোনো বাধা নেই। মৃগী রোগের ওষুধ নিয়মিত খেতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বন্ধ করা যাবে না। ওষুধ বন্ধ করলে খিঁচুনি দেখা দেবে। শিশুদের নিজে নিজে ওষুধ খেতে না দিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ওষুধ খাওয়ান।

__________________________________________________________

 

 

 

__________________________________________________________

__________________________________________________________

 

 

 

 

 

 

 

 

  

Loading