নিজস্ব প্রতিনিধি – করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভারতে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতিদিনই মৃত্যু ও সংক্রমণে তৈরি হচ্ছে নতুন রেকর্ড।এ অবস্থায় দেশটির স্বাস্থ্য পরিকাঠামো রীতিমতো ধুঁকছে। গত ২৫ দিনে দেশটিতে ১১৬ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।ভারতে এক বছরের বেশি সময় ধরে করোনার বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে লড়াই করছেন চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীরা। দিন রাত এক করে তারা করোনা রোগীর সেবা করে চলেছেন। তবে চারদিকে অক্সিজেন, শয্যা, ওষুধ, টিকার হাহাকার। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে করোনাভাইরাস। ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার পর্যন্ত করোনায় ৮৬৪ জন চিকিৎসক মারা গেছেন। এর মধ্যে গত বছর ৭৩৬ জন মারা গেছেন। চলতি বছর এপ্রিল পর্যন্ত মারা গেছেন আরও ১২৮ জন। গত ২৫ দিনেই দেশটিতে মারা গেছেন ১১৬ জন চিকিৎসক। মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা শুরু থেকে বেশি। সেখানে চিকিৎসকের মৃত্যুর হারও সবচেয়ে বেশি। আইএমএর হিসাবে, মহারাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ১৬৮ জন চিকিৎসক মারা গেছেন। শুধু এপ্রিলেই ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তামিলনাড়ুতে ৮৯ জন আর পশ্চিমবঙ্গে ৮০ জন চিকিৎসক মারা গেছেন। মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগ অনুযায়ী, এই রাজ্যের ১৭ হাজার ৯৭৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১১ হাজার ২৩৫ জন সরকারি হাসপাতালের। আর ৬ হাজার ৭৪০ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের।মহারাষ্ট্রে বহু নার্সও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই সংখ্যা ৪ হাজার ২১৭। জানা গেছে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে ৫০ থেকে ৭০ বয়সী চিকিৎসক বেশি মারা গেছেন। এমনকি বহু তরুণ চিকিৎসকেরও মৃত্যু হয়েছে। এ বছর এপ্রিলে মহারাষ্ট্রের কল্যাণের ২৮ বছরের তরুণ চিকিৎসক সুরজ মিশ্রা করোনায় মারা গেছেন। প্রায় একইসঙ্গে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন সুরজের বাবা চিকিৎসক নগেন্দ্র মিশ্রা (৫৮)। তারা দুজনই টিকা নিয়েছিলেন। করোনায় আক্রান্ত মৃত চিকিৎসক হিসাবে সুরজ দেশের মধ্যে সবচেয়ে কনিষ্ঠ। ছাড়া ৩০ বছর বয়সী আরওদক দুই চিকিৎসক করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে প্রাণ হারিয়েছেন। তাই সবমিলিয়ে রীতিমতো চিন্তিত ভারতের প্রশাসন।