শান্তি রায়চৌধুরী : ভারতীয় ক্রিকেটাররা আইপিএল উপলক্ষ্যে প্রায় দেড়মাস দুবাইতে আছেন। পরিবেশ এবং মাঠ সম্পর্কে তাদের পরিচিতি সব থেকে ভালো। কিন্তু, দেশের হয়ে জার্সিতে আইপিএল বাঘেরাই যেন বিড়াল হয়ে মিউ মিউ করছে। বিরাট নিউজিল্যান্ড ম্যাচ শেষে দু’টি কথা বলেছেন। এক, জেতার মতো সাহস আমরা দেখাতে পারিনি। দুই, দেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের প্রত্যাশার চাপটা নিতে পারিনি। বিরাটকে সবিনয়ে প্রশ্ন করতে হয়- কাপুরুষরা কবে সাহস করে বুক চিতিয়ে থেকেছে? আর দেশের মানুষের প্রত্যাশা? যখন বোর্ডের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা মাইনে, বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নেন বিরাট কোহলি এবং অন্য ভারতীয় ক্রিকেটাররা তখন কি দেশের মানুষের কথা তাদের একবারও মনে থাকে? মনে থাকে কি দেশের অভুক্ত মানুষেরা এই ভারতীয় দলের খেলা দেখার জন্য টিভি সেটের সামনে বসে পড়ে কলের জল খেয়ে! প্রত্যাশার চাপ আর কোহলিরা কি অনুভব করেছেন! ভারতীয় ক্রিকেট দলের একটি জয় কি প্রত্যাশার পাহাড় তৈরি করে? মাঠে কোহলিদের লড়াই দেখে এই হ্যাভ-নট ভারতীয়রা ক্ষুধা তৃষ্ণা ভুলে নিজেরাই এক একজন কোহলি হয়ে যায়। আর দলকে কাপুরুষের মতো হারতে দেখলে অন্ধকারের বিবরে মুখ লুকায়। এদের প্রত্যাশা যখন খান খান করে ভেঙে দেন ক্রিকেটাররা, তখন? তেলের শিশি ভাঙলো বলে খুকুর ওপর রাগ কর, আর তোমরা যে সব বুড়ো খোকা ভারত ভেঙে ভাগ কর, তার বেলা! ভারতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের গড়পড়তা পড়াশোনা এমন নয় যে, তারা এই লাইনগুলো শুনবেনই। কিন্তু, আজও বোধহয় এই লাইনগুলো প্রাসঙ্গিক। টি টোয়েন্টিতে কোহলি – শাস্ত্রীরা নোটিশ পিরিয়ডে আছে বলেই ভারতের এই অবস্থা । নেটিজেনদের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত হওয়া গেল না। মাঠে খেলতে নেমে কেউই হারতে চায় না। না, বিরাট কোহলিও নয়, রবি শাস্ত্রীও নয়। আসলে অপারগতা আর আসামর্থ আজ ক্রিকেটারদের এই জায়গায় এনে ফেলেছে। ওঁরা নাকি পেশাদার! যে পেশাদারিত্বে হারের পর অনুশোচনা থাকে না, সেই পেশাদারিত্ব শিকেয় তোলা থাক। ভারতীয় ক্রিকেট দলকে কেন্দ্র করে জাতীয় আবেগ তার জায়গাতেই থাক। শুধু আমরা বাঘ আর বিড়ালের তারতম্যটা বুঝতে পারলেই হলো!