ধৃতিমান বড়ুয়া (বিশেষ প্রতিনিধি) – বর্তমানে করোনা মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্যর মতো সমস্যাগুলোর তীব্রতা অভূতপূর্ব হারে বেড়ে গেছে। এর ফলে বিশ্বের কোটি কোটি শিশুর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে বিশ্বের কিছু দেশে স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি চললেও পৃথিবীর এক চতুর্থাংশ দেশেই শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ার হুমকিতে রয়েছে। আজ সোমবার সেভ দ্য চিলড্রেনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। জাতিসংঘের হিসাবে, করোনাভাইরাস মহামারিতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রায় দেড় শ কোটি শিশু স্কুলবঞ্চিত হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত এক-তৃতীয়াংশের কাছে ঘরে বসে শিক্ষাগ্রহণের সুযোগও ছিল না। বর্তমানে উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলো চরম দারিদ্র্য, কভিড-১৯, জলবায়ু পরিবর্তন, আন্তঃসম্প্রদায় সহিংসতাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। এর ফলে সেখানে ‘শিক্ষার্থীদের একটি হারিয়ে যাওয়া প্রজন্ম’ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ ধরনের পরিস্থিতি বিবেচনায় ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি তালিকা করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন। এ তালিকায় কঙ্গো, নাইজেরিয়া, সোমালিয়া, আফগানিস্তানসহ আটটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ‘মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সংস্থাটির গবেষণায় করোনারোধী টিকাদানের পরিসর, জলবায়ু পরিবর্তন, শারীরিক আক্রমণ এবং স্কুলশিক্ষার্থীদের বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগের মতো বিষয়গুলোও বিবেচনা করা হয়েছে। এতে বলা গেছে, ইয়েমেন, বুরকিনা ফাসো, ভারত, ফিলিপাইন, বাংলাদেশসহ আরও ৪০টি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ‘উচ্চ ঝুঁকি’ রয়েছে।
সেভ দ্য চিলড্রেন যুক্তরাজ্যের প্রধান নির্বাহী গোয়েন হাইনস বলেন, আমরা জানি যে, করোনায় স্কুল বন্ধের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দরিদ্র শিশুরা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, শিশুদের শিক্ষা ও জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া বিষয়গুলোর মধ্যে মাত্র একটি হচ্ছে কভিড-১৯। তার মতে, আমাদের এ ভয়াবহ অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং এখনই কাজ করতে হবে। কিন্তু বিষয়গুলো আগেরমত করাই যথেষ্ট নয়। এটিকে আশা ও ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে আমাদের ‘অগ্রগামী এবং ভিন্নভাবে’ সব কিছু গড়ে তুলতে হবে।