তন্ত্রমতে ভেষজ গুণ ও প্রতিকার
বিশ্ববাংলা সেরা সম্মান ২০১৮, মাদার টেরেজা স্মারক সম্মান ২০১৮,
বঙ্গরত্ন গৌরব সম্মান ২০১৮ দ্বারা অলংকৃত
আচার্য্য শিবু শাস্ত্রী
আচার্য্য, শাস্ত্রী, প্রাক শাস্ত্রী, রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত সংস্থানম
(ভারত সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক দ্বারা পরিচালিত)
জ্যোতিষ ভারতী, জ্যোতিষ শাস্ত্রী, জ্যোতিষ আচার্য, তান্ত্রিকাচার্য্য,
জ্যোতিষ এশিয়াশ্রী উপাধি প্রাপ্ত (স্বর্ণপদক প্রাপ্ত)
যোগাযোগ – ৯৮৩০২৯২১৭৪
Email : acharyashibusastri@gmail.com
১) শ্লেষ্মা প্রধান জুর হলে
শুধু বাসক পাতা ও বাসক ছালের ক্কাথ করে মধু মিশিয়ে খেলে রক্তপিত্ত রোগ তো সারবেই, সেই সঙ্গে কাশি ও পিত্ত শ্লেষ্মাপ্রধান জ্বর সেরে যাবে। ২) পিত্ত রোগ, কাসরোগ, ক্ষয়রোগে অবসন্ন হলে
বাসায়ং বিদ্যমানায়াং আশায়ং জীবিতস্য চ।
(2) রক্ত পিত্তী ক্ষয়ী কাসি – যাবৎকালে বাসক নামের ভেষজটি জগতে বিদ্যমান থাকবে তাবৎকাল রক্তপিত্ত রোগী, কাসরোগী, ক্ষয়রোগী যেন অবসন্ন না হয়, কারণ বাসক থাকলেই বাঁচার আশাও অবশ্য রাখতে হবে।
৩) রক্তপিত্ত রোগে
পটুপাকে সিদ্ধ বাসক পাতার রসের সঙ্গে প্রিয়ঙ্গু চূর্ণ, সৌরাষ্ট্র মৃত্তিকা চূর্ণ, রসাঞ্জন চূর্ণ এবং লোধ চূর্ণ মিশিয়ে এবং মধু মিশিয়ে খেলে রক্ত পিত্ত রোগ সেরে যায়।
৪) রক্তপিত্তের রক্তবধ করার জন্য
লাক্ষাকে খুব মিহি করে চূর্ণ করে (লাক্ষার) সেই চূর্ণ পরিমাণ মত নিয়ে মধুর সঙ্গে বেঁটে খেলে তার সঙ্গে সামান্য ঘি মিশিয়ে) তাতে ঊর্ধ্বগত রক্তপিত্ত (রক্তবমি) তৎক্ষণাৎ বন্ধ হয়।
খ) যার গায়ে দুর্গন্ধ পাশের লোকের নাক বন্ধ৷ কুশমূল বাটা গায়ে মাখুন হবে না মন্দ ৷৷
অর্থৎ ডুমুর ফলের রস এবং মধু এই দুটি একত্র মিশিয়ে খেলে রক্তপিত্ত রোগ আশু নিবারিত হয়।
গ) অতসী ফুল, বরাহক্রাস্তা আর বটের ঝুরি এই তিনটি সমান মাত্রায় নিয়ে জল দিয়ে বেটে প্রত্যহ খেলে এবং কাচামুগের যূয পথ্য করলে তার রক্তপিত্ত রোগ থাকে না।
ঘ) বাসকপাতা, কিমিস্ ও হরিতকি এইগুলি পরিমাণ মত নিয়মে নিয়ে পচন ক্রিয়ার পর, আরক প্রস্তুত করে, সেই আরকের সঙ্গে প্রত্যহ মধু মিশিয়ে খেলে রক্তপিত্ত রোগ সেরে যায়।
৫) অগ্নিমান্দ্যের ও শীতপিত্ত রোগ- আখের পুরাতন গুড় এবং আদার রস এই দুটি পরিমাণ মতো খেলে যেকোন অগ্নিমান্দ্যের সঙ্গে শীতপিত্ত রোগ অচিরেই সেরে যায়। ৬) ঠোঁটে ক্ষত হলে বা ঠোঁট ফাটলে
কিছু তিলের তেল, ওই পরিমাণে গাওয়া ঘি সম পরিমাণে ধূনার গুড়া, মোম আর তার সঙ্গে ভালো গুড় আর সৈন্ধব নুন এবং গিরিমাটি এগুলি একত্র মিশিয়ে অল্প আগুনে ধীরে ধীরে পাক করলে একটি মলম তৈরি হবে। ওই প্রলেপ দিয়ে ঠোট দুটি আস্তে আস্তে ঘসলে, ঠোঁট ফাটা, ঠোটে যন্ত্রণা, ঠোটের ক্ষত সেরে যায়।
চুলকানি খোস রোগ হলে-দূর্বা ও কাঁচা হলুদ একত্রে বেটে তা দিয়ে সর্বাঙ্গে প্রলেপ দিলে অনে মালিশ করলে, চুলকানি খোস পাষা, ক্রিমি, দাদ, শীতপিত্ত রোগ সেরে যায়।
৮) মুখে দুর্গন্ধ হলে- হীরাকস, লোধছাল, পিপুল, শোধিত মনঃশিলা, প্রিয়ঙ্গু এবং তেজক এগুলিকে চূর্ণ করে মিহি কাপড়ে ছেকে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে দাঁতের মাড়িতে বার বার প্রলেপ দিলে পচা মাংস এবং দূর্গন্ধ দূর হয়। ৯) দাঁত ও মাড়ি থেকে রক্তস্রাব হলে প্রতিকার
ক) আমলকী, লোধ, মুথা, বরাহক্রান্তা, আকনাদি, কটকী চৈ ও হলুদ এগুলি সমান মাত্রায় নিয়ে চূর্ণ করে সেই চূর্ণ দিয়ে দাঁত মাজলে মাড়ির ব্যথা সেরে যায়।
খ) দন্তপুপ পুট রোগে – অর্থাৎ দন্তপুপুট রোগের প্রথমাবস্থায় দূষিত রক্তটা মাড়ি থেকে বের করে দিয়ে পরে মধুর সঙ্গে পাঁচ প্রকার লবণ চূর্ণ এবং যবক্ষার চূর্ণ মিশিয়ে দাঁতের গোড়ায় এবং সমস্ত (উপরের নীচের) মাড়িতে আস্তে আস্তে ঘষলে সেরে যায়।
(১০) দাঁত পড়ে গেলে তার প্রতিকার
ক) করঞ্জ, করবী, আকন্দ, মালতী, অর্জুন এবং অশন গাছের ডাল দিয়ে দাঁতন করলে এবং এই ধরণের অন্যান্য গাছের ডালে দাঁতন করলে নড়া দাঁত শক্ত
খ) ঝিটি পাতার ক্বাথ করে সেই দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কুলকুচি করে পরে তিল এবং বচ এই দুটি জিনিষ কিছু সময় চিবিয়ে ওই রস মুখের ভিতর নাড়াচাড়া করলে দাঁত শক্ত হয়।
১১) দন্তশূল হলে প্রতিকার- বকুল ছালের ক্কাথ করে গন্ডুষ করলে কিংবা পিপুল চূর্ণ যত তার দ্বিগুণ ঘৃত এই দুটির সঙ্গে চারগুণ মধু মিশিয়ে সেটি কিছুক্ষণ মুখে রেখে জিভ দিয়ে সারা দাঁত নাড়াচাড়া করলে দন্তশূল থাকে না।
১২) দন্তনালী হলে তার প্রতিকার – জাতীফুলের পাতা, ময়না পাতা, কটকী ও বৈঁচ পাতা এদের ক্বাথ করে মুখে নিয়ে কুলকুচি করলে এবং খয়ের মঞ্জিষ্ঠা লোধ ও যষ্টিমধু এদের ক্বাথ করে তেল পাকের নিয়মে তেল পাক করে সেই তেল দাঁতের নালীতে প্রত্যহ কয়েক বার দিয়ে অল্পজোরে মাড়ি মাজলে দস্তনালী সেরে যায়।
বিছুটি লাগলে গায়ে যন্ত্রনায় ভোগে। বিছুটির মূলে বলাধান সারে বলে চরকে।।
কৃমি রোগে- কুক্শিমা, ভেরেণ্ডার শিকড় পাক করে কুলকুচি করলে ক্রিমি রোগের
নীলীগাছ, কাকজঙ্ঘা, সির্জমনসা এবং অশ্বত্থ প্রভৃতি আঠা যুক্ত ডাল চিবিয়ে দাঁতে ঘসলে (দাঁতন করলে) কিছুটা সময় চেপে দাঁতের ক্রিমি পড়ে যায়।
১৪) দাঁত কিড়মিড় রোগের প্রতিকার
কাঁকড়ার দাড়া ভেঙ্গে দুধের সঙ্গে পাক করে সেই দিয়ে আবার পাক করতে হবে। সেই দাঁতে মাখালে দাঁত কিড়মিড় রোগ সেরে যায়।
১৫) দাঁত কানে ব্যথার প্রতিকার – জাতীফুলের পাতা, শ্বেত পুনর্ণবা, তিল, পিপুল, ঝাটি পাতা, মুথা, বচ, শুঠ, জোয়ান হরিতকি এইগুলি সমান মাত্রায় নিয়ে করে ছেঁকে, একটু ঘি মাখিয়ে (প্রত্যহ শুকনো চূর্ণ নিয়ে মাখিয়ে) মুখে কিছুক্ষণ রাখলে দাঁতের শূলব্যথা, এবং দাঁতের জন্য কানের ব্যথা এবং মুখের দুর্গন্ধ অবশ্যই সেরে যাবে।
দাহ রোগে যার শরীর দিনে দিনে যায় কমে। মুসুর ডালের জল খাও নিয়মিত করে।।
(১৬) মুখপাকে বা মুখে ঘা হলে প্রতিকার – কাষ্ঠ রসাঞ্জন, লোধছাল কুড়, শোধিত, মনঃশিলা, ওঠ, গিরিমাটি, আকনাদি হলুদ এবং গজপিপুল এগুলি সিদ্ধ করে সেই ক্কাথে (ঠাণ্ডা হলে) মধু মিশিয়ে মুখে দিয়ে বার বার কুলকুচি করলে মুখপাক সেরে যায়।
(১৭) মুখে মদ খেয়ে বা রসুন পেঁয়াজের গন্ধ হলে- মুথা, কুড়, বড় এলাচ, ধনে, যষ্টিমধু এলবালুক এইগুলির চূর্ণ মুখে রাখলে মদের দুর্গন্ধ, রসুন পেঁয়াজের দুর্গন্ধ বা কোন দুর্গন্ধ যুক্ত দ্রব্য খেলে সে দুর্গন্ধ আর থাকে না। ১৮) চুনে গাল পুড়ে গেলে তার প্রতিকার চুন খেয়ে বা অন্য কোনো ক্ষার দ্রব্য খেয়ে গাল পুড়ে গেলে কিংবা জিভ পুড়ে গেলে তিলবাঁটা কিংবা নীল‡দির ক্কাথ ঘি, চিনি, দুধ এবং মধু মিশিয়ে সেই দিয়ে কুলকুচি করলে তৎক্ষণাৎ সেই পোড়ার জ্বালা এবং ক্ষত সেরে যায়।
বি.দ্র- রোগ আরোগ্যের বিধানগুলি ব্যবহার করার পূের্ব পরিমাপ জানতে অভিজ্ঞ কবিরাজের পরামর্শ নিন। কারণ অপব্যবহারে বিষক্রিয়ার সমান।