নিজস্ব প্রতিনিধি – ২০১৯ সালের একেবারে শেষ প্রান্তে মানুষের সঙ্গে পরিচয় ঘটে এক ভয়ানক ব্যাধির, যা এখন পর্যন্ত পৃথিবীর প্রায় অর্ধকোটি মানুষের প্রাণ কেড়েছে। ভয়াবহ এ ব্যাধির নামেও তাই ওই বছরের কথা যুক্ত থাকবে সব সময়। কোভিড-১৯। এখনও বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ সীমাহীন কষ্ট-দুর্ভোগে জীবনযাপন করছেন। এ দুর্ভোগ এনে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। বিশ্বে বেড়েছে দরিদ্রতা। শিশুরা স্কুলে ফিরলেও আগের সেই প্রাণচাঞ্চল্য কি আছে? কারণ, গুপ্ত ঘাতক করোনাতো দৃশ্যের বাইরে কোথাও ওঁৎ পেতে আছে। মানুষ এক সময় জানতই না লকডাউন, কোয়ারেন্টিন কী। কোভিড-১৯ নতুন এ শব্দগুলোর সঙ্গে আমাদের পরিচয় ঘটিয়েছে। যা হোক, সবার মনে এখন একটাই প্রশ্ন, কবে যাবে করোনা? কবে আবার মুক্ত হবে পৃথিবী? অনেকেই আগামী ছয় মাসের মধ্যে সবাই কোভিড-১৯ এর দীর্ঘ ও ভয়নক সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে আলোর স্ফুরণ দেখতে চান। কিন্তু বিজ্ঞানীরা দিচ্ছেন উল্টো বার্তা। তারা বলছেন, চলমান পরিস্থিতির মতো আরও পরিস্থিতি সামনে মোকাবেলা করা লাগতে পারে। তাদের হুঁশিয়ারি, নতুন সংক্রমণ আবারও বন্ধ করে দিতে পারে বিদ্যালয় ও শ্রণীকক্ষে পাঠদান। টিকা গ্রহণ করা চিকিৎসাকর্মীরা নতুন করে সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। আবারও হাসপাতাল পূর্ণ হয়ে উঠতে পারে রোগীতে; বাড়ি ফিরে চিকিৎসাকর্মীরা কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত হওয়া নিয়ে আতঙ্কে থাকবেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যখন এ মহামারি শেষ হবে, তখন প্রায় প্রত্যেকে হয় টিকাগ্রহণকারী হবেন, নতুবা হবেন করোনা জয়ী (আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়া)। দুটো একসঙ্গেও হতে পারেন। কেবল কয়েকজন দুর্ভাগাকে পাওয়া যাবে, যারা একাধিকবার সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে এ ধরনের একটি ভবিষ্যদ্বানী এলেও তারা জানাতে পারেননি কবে শেষ হবে এ ধ্বংসযজ্ঞ। কিভাবে করোনা আবারও ভয়ানক রূপ নিতে পারে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, ধরন (ভ্যারিয়েন্ট) বদলে করোনা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। তাদের বক্তব্যে করোনার নতুন ধরন আসার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা এবং ইউনিভার্সিটি অব মিনিসোটার রোগ গবেষণা বিশেষজ্ঞ মাইকেল ওস্টারহোম বলেন, ‘আমি বিশ্বব্যাপী এর (কোভিড-১৯) অব্যহত বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে এখনও কোটি কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনা যায়নি। এরইমধ্যে ভাইরাসটিকে একেবারে খতম করে দেয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। লোকজন ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েছে। শ্রেণীকক্ষ, গণপরিবহণ ও কর্মস্থলে তাদের সরব ও যৌথ উপস্থিতি। না চাইলেও এতে করোনা সংক্রমণ বাড়ার ঝুঁকিও অনেকেটাই বেড়েছে।

Loading